সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড: বিচার ও সুরক্ষা আইনের দাবিতে প্রেসক্লাবে মানববন্ধন

গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ–এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং সারা দেশে সাংবাদিক লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব্র সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, তুহিন হত্যার দ্রুত বিচার এবং নিহতের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার দাবি জানান।
প্রধান অতিথি জয়নাল আবদীন শিশির বলেন, 'গত ১৭ বছরে সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছে ও চাকরি হারিয়েছে সাংবাদিকরা। অনেককে বিদেশে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। আপনারা লাশের উপর শপথ নিয়েছেন, আমাদের সাথে এবং সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের সাথে বেইমানি করবেন না। ১৭ বছর ধরে আমরা বিচার চাইছি, পাইনি। ভেবেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই আন্দোলনের পর সাংবাদিক হত্যার বিচার করবে, কিন্তু কিছুই দৃশ্যমান হয়নি।'
তিনি তুহিনসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার, চাকরি হারানো সাংবাদিকদের পুনর্বহাল, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবি জানান। 'জুলাই আন্দোলনের পর বিভিন্ন পেশাজীবী সুবিধা পেয়েছেন, কিন্তু আমাদের নবম ওয়েজ বোর্ড এখনো বাস্তবায়ন হয়নি,' যোগ করেন তিনি।
এনটিভির প্রিন্স নাহিদ বলেন, 'আমরা শুধু গাজীপুরের হত্যাকাণ্ড নয়, গত এক বছরে বহু সাংবাদিক আহত ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। কোন সাংবাদিক আহত বা অপমানিত হলে সরকারের টনক নড়ে না।'
এটিএন বাংলার আজগর আলী বলেন, 'দেশের মানুষের দুঃখ–দুর্দশা তুলে ধরতে আমরা প্রেস ক্লাবে আসি। কিন্তু আজ আমাদের নিজেদের হত্যার প্রতিবাদে দাঁড়াতে হচ্ছে। ভালো সাংবাদিকদের পরিণতি হয় গুম, হত্যা, অথবা দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া। এভাবে ভালো সাংবাদিক জন্মাবে না, কারণ আমরা তাদের জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করতে পারি না।'
যুগান্তর–এর ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, 'ঘটনার পর থেকে তথ্য উপদেষ্টা শুধু এসি রুমে বসে আছেন, কোন বিবৃতি আসেনি। সাংবাদিক সংগঠনগুলোও চুপ আছে। সরকার ও নেতৃবৃন্দকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, নিহতের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে এবং হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে, না হলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।'
জনকণ্ঠ–এর ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ইসরাফিল ফরায়েজি বলেন, 'তুহিন ভাইকে চাপাতি ও রামদা দিয়ে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা সাধারণ ঘটনা নয়। এসব অস্ত্র ছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের হাতে। ২৪ শের আন্দোলনের পর যদি এমন অবস্থা দেখতে হয়, তবে আমাদের কোনো নিরাপদ জায়গা থাকে না।'