বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে ইইউ-যুক্তরাজ্যসহ ৫ দেশ

বাংলাদেশের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে গণতান্ত্রিক যাত্রার প্রতি নিজেদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি ও ফ্রান্স। এছাড়া, তারা আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এসব দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলো তাদের সরকারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশিত বার্তায় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রতি সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে তারা।
ইইউ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলেছে, এক বছর আগে, সমাজের সকল স্তরের বাংলাদেশিরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য এবং অধিকতর ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজ আমরা তাদের সাহস ও সহনশীলতাকে সম্মান জানাচ্ছি, যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের স্মরণ করছি ও আহতদের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।
বিবৃতিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ইইউ সমন্বিত ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, গুরুত্বপূর্ণ শাসন ও মানবাধিকার সংস্কার বাস্তবায়নে সকল পক্ষকে গঠনমূলক সংলাপে অংশ নিতে হবে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বিবৃতির শেষে বলা হয়, 'গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হওয়ার পথে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে পারে।'
যুক্তরাজ্য তার বিবৃতিতে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেছে, আজ বাংলাদেশে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হলো। এ অভ্যুত্থানে যারা প্রাণ হারিয়েছেন আমরা তাদের স্মরণ এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের কথা স্মরণ করি।
বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে পোস্টে বলা হয়, 'গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে যুক্তরাজ্য অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে।'
অস্ট্রেলিয়া তার বিবৃতিতে এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ হারিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, আমরা তাঁদের স্মরণ করছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় আমরা বাংলাদেশকে সমর্থন করি।
জার্মানি এক বিবৃতিতে জানায়, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে, জার্মান দূতাবাস বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সমর্থন করার জন্য বার্লিনের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বাংলাদেশের জনগণের শান্তিপূর্ণ, সর্বব্যাপী ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষাকে আমরা সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেখানে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও সবার মর্যাদা নিশ্চিত হয়।'
কানাডা ও ফ্রান্সও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে।
ঢাকায় কানাডার দূতাবাস তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পাতায় এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জনগণের সাহস এবং তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার স্বীকৃতি জানাতে গুরুত্বপূর্ণ দিনটি উদযাপনে তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে কানাডা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ন্যায্য, শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য কাজ করা সবার সঙ্গে আমরা সংহতি প্রকাশ করছি।
ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পাতায় এক বিবৃতিতে জানায়, "আজকের দিনটি ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের করুণ ঘটনার স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে। ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল।"
বিবৃতিতে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ফ্রান্সের অটুট সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।