নারীকে রাজনীতি ও মূলধারার বাইরে রেখে নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়: তারেক

নারীকে রাজনীতি ও মূলধারার বাইরে রেখে কখনোই নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ মিলনায়তনে 'ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান' শীর্ষক আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, 'স্বাধীনতা রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও জীবন দিয়েছেন। শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানেই কমপক্ষে ১০ জন নারী শহীদ হয়েছেন। একজন নারীর সংগ্রামকে কেবল হতাহতের পরিসংখ্যানে সীমাবদ্ধ করলে তা তাদের আত্মত্যাগের প্রতি অবিচার হবে।'
নারী শিক্ষায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া নারীদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন।'
তারেক রহমান বলেন, 'নারীশক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনো রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারে না। নারীশক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি সকল কর্মপরিকল্পনা সাজায়। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব দেশেই নারীদের জন্য শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসাসহ সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত। নারী-পুরুষ বিভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা ও দক্ষতায় গড়ে তুলতে হবে।'
তিনি বলেন, 'নারীদের শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারলে বৈষম্য কমবে এবং পারিবারিক সহিংসতা রোধে তা ভূমিকা রাখবে। এ কারণে বিএনপির স্লোগান—'ক্ষমতায়ীত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি'।'
তারেক রহমান বলেন, 'বিএনপির নীতি হলো মানবিক মূল্যবোধে উৎজীবিত দক্ষ জনশক্তি গড়ার এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরির রাজনীতি। তিনি জানান, দেশে নারীপ্রধান পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে, তবে স্বাবলম্বিতার বিচারে নারীরা এখনও পিছিয়ে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বিএনপি ইতোমধ্যে কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।'
তিনি বলেন, 'দেশে পরিবারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা ৫০ লাখ পরিবারের জন্য 'ফ্যামিলি কার্ড' চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারী প্রধানের নামে এই ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে।'
তারেক রহমান বলেন, 'শহীদদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনে নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশে যাতে আর কখনও ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে বিশেষ করে নারীসমাজকে সতর্ক থাকতে হবে।'
সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'সবার জন্য নিরাপদ, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার চলমান অভিযাত্রায় অতীতের মতো ভবিষ্যতেও মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সমর্থন প্রত্যাশা করি।'