৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র-জনতার সঙ্গে প্রতারণা করেছিল: নাহিদ

৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র-জনতার সঙ্গে প্রতারণা করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) আহ্ববায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, '৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিকগুলো ছাত্রদের সঙ্গে, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তিন দলীয় জোটের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু সেই রূপরেখা কোনো দল মানে নাই। ফলে আমরা এবার আর কোনো প্রতারণার সুযোগ দেবো না।'
দেশব্যাপী চলমান দেশ গড়তে 'জুলাই পদযাত্রা'র ২৯তম দিনে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে গাজীপুর মহানগরীর ঐতিহাসিক রাজবাড়ীর (জেলা প্রশাসক কার্যালয়) সামনের সড়কে আয়োজিত পদযাত্রা পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় নাহিদ বলেন, 'আমরা বলেছি ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র হতে হবে। এর কোনো বিকল্প আমরা দেখতে চাই না। সরকার জুলাই সনদের খসড়া ঘোষণা প্রকাশ করেছে। আমরা বলেছিলাম জুলাই সনদ, সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য হলে হবে না, সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সেই বিষয়ে ঐক্যমত্য হওয়া লাগবে।'
তিনি বলেন, 'জুলাই সনদ হতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে এবং এর আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। নির্বাচনে যেই দলই সরকার গঠন করে ক্ষমতায় আসুক, তাকে এই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে।'
নাহিদ বলেন, 'আমরা আশা করব ৫ আগস্টের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এবং সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে পারবে। আমাদের আকাঙ্ক্ষিত গণঅভ্যুত্থানের এক বছর আমরা সকলে একসঙ্গে উদযাপন করতে পারব এবং বিজয় উদযাপন করতে পারব।'
তিনি বলেন, 'গাজীপুর সবসময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামে এগিয়ে রয়েছে। জেলায় আন্দোলন ও আমরা গাজীপুরবাসীকে আমাদের সঙ্গে পেয়েছি। এই গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীরের মত দুষ্কৃতিকারীকে আমরা বিতাড়িত করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনও জাহাঙ্গীরের সহযোগিরা গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গেছে। আমরা তাদেরকেও খুব শিগগিরই বিতাড়িত করব ইনশাল্লাহ।'
এনসিপির এই নেতা বলেন, 'আমরা শুনেছি গাজীপুরে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা। আমি হুঁশিয়ার করতে চাই, বাংলাদেশের যতদিন গণঅভ্যুত্থানের শক্তি জীবিত আছে, রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের শক্তি সক্রিয় আছে; আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদী শক্তি আর কোথাও দাঁড়াতে পারবে না। গাজীপুর থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।'
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, 'আমরা গাজীপুরে শহীদ পরিবার এবং আহত ভাই-বোনদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা প্রশাসনের উদ্দেশে বলতে চাই, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।'
সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সংগঠন সার্জিস আলমের সঞ্চালনায় আরও ব্ক্তব্য রাখেন- এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য যুগ্ম সংগঠক আলী নাসের খান, এনসিপির গাজীপুর অঞ্চলের সমন্বয়ক মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, এনসিপির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সংগঠক এম এম সোহাইল, আব্দুল্লাহ আল মহিন। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, ডা. সামান্তা শারমিন ও তাসনিম জারাসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।