সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছে, এই সরকারের নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই: জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, এখন সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছে, এই সরকারের ভেতরে আরেকটা সরকার আছে। বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়। তাদের নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই।
সোমবার (২৮ জুলাই) পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীর সই করা এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়েছে, আমাদের অফিস ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তখন সরকার উৎকণ্ঠিত হয়নি, এমনকি দুঃখ প্রকাশও করেনি। যেদিন থেকে আমি এই সরকারের সমালোচনা করা শুরু করেছি, সেদিন থেকেই আমার নামে মামলা দেওয়া শুরু করেছে। আমার নামে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। আমাকে পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই হত্যাকাণ্ডের মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি প্রশাসন, পুলিশ ও সেনা সদস্যদের সহায়তায় একটি দল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আবার আমাদের মতো নিবন্ধিত দলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে এই সরকার কীভাবে দল নিরপেক্ষ হয়? ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনা ও গ্রহণযোগ্য নিবাচন আয়োজনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশের এ অসহনীয় পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। সেই নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যদি সবাইকে নিয়ে একযোগে কাজ করে, তাহলেই দেশটা হয়তো রক্ষা পাবে। সরকারকে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে কোনো সরকারি দল থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, দোসর আখ্যা দিয়ে এখন আমাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চলছে। আমাদের রাজনীতি করতে দেবে কি না বা নির্বাচন করতে দেবে কি না, তা নিয়ে সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা যেহেতু এ প্রেক্ষাপটে দেশে বা বিদেশে গ্রহণযোগ্য করা যাচ্ছে না, সে কারণে জি এম কাদেরবিহীন জাতীয় পার্টি তৈরির অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এখন যারা সরকার চালাচ্ছে, তাদের চেয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জাতীয় পার্টি অনেক বেশি সক্রিয় ছিল জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, আমরা অনেক বেশি ঝুঁকি নিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী নেতৃত্ব দেওয়ায় রংপুরে আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছিল। অন্তত চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। আমাদের দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী। শহীদ আবু সাঈদের কবর রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সবার আগে আমিই জিয়ারত করেছি। জাতীয় পার্টি আবু সাঈদের পরিবারকে সান্ত্বনা ও সহায়তা দিয়েছে।