এনসিপির পদযাত্রা: বিদ্যালয় দুদিন বন্ধ রাখার আগের নোটিশকে এখন ‘ভুয়া’ বলছে কর্তৃপক্ষ

আগামী রোববার নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ দিন দলটি শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরোনো কালেক্টরেট মাঠে পথসভা করবে। এ উপলক্ষে জেলার নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তবে এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনা পুলিশ লাইনস স্কুলে দুই দিন ছুটি ঘোষণা করে একটি নোটিশ জারি করা হলে তা ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দেওয়া ওই নোটিশে জানানো হয়, এনসিপির রোববারের কর্মসূচির জন্য বাইরে থেকে আসা পুলিশ সদস্যরা ওই স্কুল ভবনে অবস্থান করবেন। তাই রোববার ও সোমবার বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে এবং পরীক্ষাও স্থগিত থাকবে। মঙ্গলবার থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে এবং ২৭ তারিখের পরীক্ষা ২৯ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে।
নোটিশটি গতকাল রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির কারণে কেন স্কুল ছুটি দেওয়া হলো এবং পরীক্ষাও স্থগিত করা হলো।
সমালোচনার মুখে আজ শুক্রবার সকালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ 'প্রতিবাদলিপি' নামে নতুন একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, আগের নোটিশটি সঠিক নয় এবং তা 'ভুয়া'। এতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি মহল মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। মূলত স্কুল যথারীতি খোলা থাকবে এবং নির্ধারিত সময়েই ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে আগের নোটিশটি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে তাতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের স্বাক্ষর থাকলেও আজ (২৫ জুলাই) দুপুরে তিনি দাবি করেন, ওই নোটিশ 'ফেইক' এবং সেখানে তার স্বাক্ষর ছিল না। তিনি কীভাবে সেটি প্রকাশ পেল, তাও জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
এর আগে আজ সকালে যোগাযোগ করা হলে ফোনে তিনি বলেছিলেন, এনসিপির সমাবেশে বাড়তি পুলিশ আসবে এবং তারা পুলিশ লাইনস স্কুলে থাকবে বলেই বিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান জানান, স্কুলে পুলিশ অবস্থান করবে এমন সিদ্ধান্ত থেকে বিদ্যালয় বন্ধ বা পরীক্ষা স্থগিতের কোনো বিষয় নেই। তিনি বলেন, 'এটা একেবারেই সঠিক নয়। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।'
তিনি আরও জানান, বাইরে থেকে আসা ৬৬ জন পুলিশ সদস্যকে নেত্রকোনা পুলিশ লাইনন্সেই রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গোপালগঞ্জে তাদের পথসভা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এবং কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক নেতার বক্তব্য ঘিরে মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পর থেকে দলটির যেকোনো সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে। নেত্রকোনায় রোববারের সমাবেশেও চার শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েনের প্রস্তুতি রয়েছে।