আমার কাছেই কিছু বাচ্চা খেলছিল, ওদের একজন সম্পূর্ণ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে: আহত প্রত্যক্ষদর্শী

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই হাসপাতালগুলোতে সন্তানদের সন্ধানে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ভীড় করেছেন।
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নিধিকে খুঁজছেন তার বড়ভাই আসাদ। 'আমরা দুপুর থেকে খুঁজছি তাকে। খবর পেয়েছিলাম ভর্তি আছে, কিন্তু সব রোগী খুঁজে আমার বোনকে পাইনি।'
বলতেই বলতেই কণ্ঠ জড়িয়ে আসে আসাদের। তিনি টিবিএসকে বলেন, 'আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা নিধিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে খুঁজছেন। আমি আমার বোনের খোঁজ চাই।'
একই হাসপাতালে তাসফিয়া সুলতানা নামে এক তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী খুঁজছেন তার বোন। তার বোনকে প্রথমে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, পরে ধারণা করা হচ্ছে বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। ছোট বোনকে খুঁজতে খুজতে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েছেন তিনি।
কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না ওই নারী।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস দিচ্ছে ইয়াহানা। স্বামী ও মেয়ে ইয়াহানার সাথে ফাতেমা খাতুন (৩৮) আজ সোমবার এসেছিলেন স্কুলে। তারা যেখানে অবস্থান করছিলেন তার খুব কাছেই বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমাটি বিধ্বস্ত হয়।

উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন তিনিও। ফাতেমা বলেন, 'হঠৎ বিকট একটা শব্দ শুনি। মুহূর্তেই আমি মাটিতে পড়ে যাই। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি আমার মেয়ে ও স্বামীকে খুঁজতে থাকি।'
তিনি বলেন, 'আমার কাছেই কিছু বাচ্চা খেলছিল। ওদের একজন সম্পূর্ণ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আরও চারজন ছিল দোলনায়, সেদিকে তাকিয়ে দেখি কিচ্ছু বাকি নেই, পুরো জায়গাটায় তখন আগুন জ্বলছে।'
দুর্ঘটনার পর ফাতেমাকে উদ্ধার করে এই হাসপাতালে আনেন তাঁর স্বামী। হাঁটুতে আঘাত পেয়েছেন তিনি। সৌভাগ্যক্রমে তাঁদের মেয়ে অক্ষত আছে।