রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভঙ্গ: এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুলের মামলার প্রতিবেদন ২০ আগস্ট

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তি প্রকাশ করে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভঙ্গ করার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসানের বিরুদ্ধে করা শেরে বাংলা নগর থানায় মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত মামলাটির এজাহার আসে। এরপর বিচারক এই এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ১৬ জুলাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মুকিতুলের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আরেক দ্বিতীয় সচিব (বোর্ড প্রশাসন-৪) মো. নুরুল আমীন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এনবিআরের কাস্টমস পলিসির দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসান (৪৩) বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী চুক্তি রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তির একটি খসড়া প্রতিবেদন 'আউটলুক বাংলাদেশ' নামক সংবাদে প্রকাশ করেন।
প্রতিবেদনটি অত্যন্ত গোপনীয় এবং নন ডিসক্লোজড অ্যাগ্রিমেন্ট হিসেবে বিবেচনাধীন থাকা সত্ত্বেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গত ৮ জুলাই খসড়া চুক্তির ওপর মতামত প্রেরণের জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে বোর্ড অ্যাডমিনে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য প্রেরণ করা হয়। বোর্ড অ্যাডমিন থেকে এই খসড়া চুক্তির বিষয়ে কাস্টমস পলিসি থেকে মতামত চাওয়া হয়।
কাস্টমস নীতিতে (পলিসি) কর্মরত দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল হাসান গত ৯ জুলাই এ খসড়া গ্রহণ করেন। মুকিতুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য অনুসন্ধানে পরবর্তীতে উদঘাটিত হয় যে, ৭১ টিভির সাংবাদিক রুহুল আমিনকে গত ১৪ জুলাই সকালে সাড়ে ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টার মধ্যে নিজ অফিস রুমে খসড়া চুক্তির ছবি দেন।
আরও বলা হয়, এই খসড়া চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখার রক্ষক তিনি। খসড়া ড্রাফট তিনি প্রস্তুত করেন। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছাড়া এই গোপনীয় চুক্তি কারও জানার কথা নয়। তিনি সাংবাদিক রুহুল আমীনকে গোপনীয় এই দলিলটি সরবরাহ করে রাষ্ট্রের গোপনীয়তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। একজন উপর্যুক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে রাষ্ট্রের গোপনীয় অফিসিয়াল ডকুমেন্ট অন্যের কাছে প্রকাশ করে রাষ্ট্রের সাথে বহির্বিশ্বের সম্পর্ক নষ্ট করার অপচেষ্টা করেছেন।
অফিসিয়াল গোপনীয়তা ভঙ্গ করে ব্যক্তি স্বার্থে ও এনবিআর তথা রাষ্ট্রের গোপনীয় চুক্তি প্রকাশে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রেখে অফিসিয়াল গোপনীয়তা আইনে অপরাধ করেছেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র মধ্যবর্তী রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ বিষয়ক চুক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় হওয়ায় এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
জানা গেছে, মো. মুকিতুল হাসান ২০১২ সালে কাস্টমস ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এনবিআরে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কাস্টমস পলিসি সেকশনে কর্মরত ছিলেন।