এনসিপির ওপর হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল জামায়াতের বিক্ষোভ

গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল দেশের সব জেলা ও মহানগরীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ জেলায় এনসিপির পূর্বঘোষিত 'মার্চ টু গোপালগঞ্জ' কর্মসূচিতে পতিত স্বৈরাচারের দোসর নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নৃশংস হামলা চালিয়েছে। তারা এনসিপির নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশে তাদের গাড়িতে হামলা করে এবং তাদের অবস্থানস্থল এসপি'র অফিসেও হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় এনসিপির বহু সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণ আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীরা অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।
"তাদের সৃষ্ট সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে আগামীকাল ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশের সকল জেলা/মহানগরীতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হল।"
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালনের জন্য সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে: হেফাজতে ইসলাম
এদিকে এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দফায়-দফায় হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একইসঙ্গে সংগঠনটি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সংগঠনটির আমীর আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমানের সই করা এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, এই ন্যাক্কারজনক হামলা গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন। এদেশে ফ্যাসিবাদের শেকড় উপড়ে ফেলাই এখন সময়ের দাবি।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পালাতে বাধ্য হয়। কিন্তু আজ সেই পতিত স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আহত করার ঘটনা প্রমাণ করে যে তারা আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করে তৃতীয়পক্ষের ইশারায় দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ত ও ব্যর্থ ভূমিকা গভীর উদ্বেগজনক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের দায়িত্ব ছিল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সুরক্ষিত রাখা—কিন্তু তারা তা করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
আরও বলা হয়, জাতির ভবিষ্যৎ রক্ষায় এখন প্রয়োজন দুর্বার গণপ্রতিরোধ। যারা দেশের মাটি রক্তাক্ত করছে, মানুষের মৌলিক অধিকারকে গলা টিপে হত্যা করছে—তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া বিকল্প নেই।
অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে এখনই তাদের মূলোৎপাটন প্রয়োজন।