পুরান ঢাকার হত্যাকাণ্ড মনে করিয়ে দেয়, এরকম অপরাধমূলক চর্চা কীভাবে রাজনৈতিক সংস্কৃতির শিকড়ে গেঁথে আছে: সেলিম রায়হান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেছেন, 'পুরান ঢাকায় সম্প্রতি চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও মব সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্ত ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এ ধরনের অপরাধমূলক চর্চা কীভাবে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির শিকড়ে গেঁথে আছে।'
আজ শনিবার (১২ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
টিবিএস পাঠকদের জন্য ড. সেলিম রায়হানের ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হলো:
'পুরান ঢাকায় সম্প্রতি চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও মব সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্ত ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এ ধরনের অপরাধমূলক চর্চা কীভাবে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির শিকড়ে গেঁথে আছে। এসব ঘটনা পূর্ববর্তী সরকারের আমলেও বেশ দেখা গেছে, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার ধারাবাহিক এক অপসংস্কৃতির দৃষ্টান্ত।'
'পুরান ঢাকার সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত দুইজনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী যুবদল। যদিও এই সিদ্ধান্ত প্রতীকীভাবে একটি অবস্থান প্রকাশ করে, তা সমস্যার গভীরতার তুলনায় অত্যন্ত ক্ষীণ ও অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ। প্রশ্ন থেকে যায়, এই রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অপসংস্কৃতি দূরীকরণের বিষয়ে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে আমরা কোনো অর্থবহ, আশাব্যঞ্জক রূপরেখা পাচ্ছি কি?'
'যদি রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের ভেতরের অগণতান্ত্রিক চর্চা দূর না করে এবং সংস্কারের বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ না করে, তবে আমরা বারবারই সেই একই দুষ্টচক্রে আবর্তিত হতে থাকব। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থান আমাদের রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে, এটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তনের একটি ঐতিহাসিক সুযোগও বটে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো কি এই সুযোগের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছে? এই সুযোগ হারিয়ে গেলে পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।'