মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার আরও ১

রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল এলাকায় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মো. টিটন গাজী নামে আরও একজন এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। এ নিয়ে এই ঘটনায় মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
আজ শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে এ হত্যামামলা তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)- এর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে।
এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
এদিকে, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।
আজ এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।'
'এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে,' উল্লেখ করেছেন পোস্টে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত দুইজন মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিন (২২)-কে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত। এর আগে, পুলিশ এক বিজ্ঞপ্তিতে মহিন ও রবিনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। অন্যদিকে, আলমগীর (২৮) ও মনির (৩২) নামে আরও দুইজনকে আটক করে র্যাব।
নিহত সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চার নম্বর রজনী ঘোষ লেনে ভাঙারির ব্যবসা করে আসছিলেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বিকেল ৬টার দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল লোক সোহাগকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর কোতয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য তা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
আরও বলা হয়, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এনিয়ে মোট চারজনকে গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।