নির্বাচনী অনিয়ম তদন্ত ও প্রবাসী ভোটসহ পাঁচ বিশেষ কমিটি গঠন করল ইসি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন চারজন নির্বাচন কমিশনার।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কমিশনের উপসচিব মো. শাহ আলমের সই করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে—ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত, আইন-শৃঙ্খলা, মাঠ প্রশাসন, নির্বাচনি অনিয়ম তদন্ত এবং প্রবাসী ভোট সংক্রান্ত কার্যাবলি।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত কমিটি
এই কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। তার নেতৃত্বাধীন কমিটির কাজ হবে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত, তদারকি ও প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা; যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ কার্যক্রম তদারকি; এদের প্রশিক্ষণের বিষয়াদি তদারকি ও সমন্বয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি।
আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটি
এই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তার কমিটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়, বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিতকরণ, ভোটকেন্দ্র বা নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, নির্বাচনি মালামাল পরিবহন ও বিতরণে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সম্ভাব্য সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখবে।
নির্বাচনি তদন্ত কমিটি তদারকির জন্য বিশেষ কমিটি
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমান মাছউদের নেতৃত্বে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার দায়িত্বে থাকবে—নির্বাচনি আইন, বিধি, প্রবিধি ও নীতিমালা প্রণয়ন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন; এসব বিষয়ের সঠিক ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নির্দেশিকা/ম্যানুয়াল প্রস্তুত; ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের সময় ইসি যুগ্ম জেলা জজদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে থাকে। তারা নির্বাচনি অনিয়ম শনাক্ত করে ইসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন। এবার এসব কমিটির কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করবে ইসি।
প্রবাসী ভোট ও পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত কমিটি
প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কার্যক্রম সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর নেতৃত্বে। এ কমিটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ পদ্ধতি প্রণয়ন, এ-সংক্রান্ত যাবতীয় সমন্বয়, সংশ্লিষ্ট দূতাবাস ও মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ এবং পর্যবেক্ষকদের কার্যক্রম তদারকি করবে।
এর আগে বুধবার রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাম্প্রতিক অগ্রগতির বিষয়ে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিল মাসে হতে পারে। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তুলতে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। তিনি আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।