উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো উপজেলা পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে একমত হয়েছে। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করে তারা।
আলী রীয়াজ জানান, দলগুলো যেসব বিষয় বিবেচনার কথা বলেছে, তার মধ্যে আছে- সদর উপজেলাগুলো জেলা জর্জ কোর্টের সাথে যুক্ত করে সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। বিদ্যমান চৌকি আদালত, দীপাঞ্চল ও ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত উপজেলা আদালতসমূহ বহাল রেখে এর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
তিনি জানান, জেলা সদরের কাছাকাছি উপজেলাগুলোয় আদালত স্থাপনের প্রয়োজন নেই। এজন্য প্রয়োজনীয় জরিপ করা দরকার এবং তার ভিত্তিতেই এটার সমাধান করা দরকার। অবশিষ্ট উপজেলাগুলোর জনসংখ্যার ঘনত্ব, ভৌগলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য, যাতায়াত ব্যবস্থা, দূরত্ব, অর্থনৈতিক অবস্থা ও মামলা সংখ্যা বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে আদালত স্থাপন করা হবে। অধস্তন আদালতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা। আইনি সহযোগিতা কার্যক্রম উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে, ভবিষ্যতে উপজেলা পর্যায়ে আদালত স্থাপন হবে।
তিনি বলেছেন, সময়ের অভাবে নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়নি। পরবর্তী আলোচনা বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হবে।
আজ সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে সংলাপে দলগুলো নীতিগতভাবে একমত প্রকাশ করে।
যদিও কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, উপজেলা সদরের ভৌগলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য, জেলা সদর থেকে দূরত্ব ও যাতায়াত ব্যবস্থা; জনসংখ্যার ঘনত্ব ও বিন্যাস এবং মামলার চাপ বিবেচনা করে কোন কোন উপজেলায় স্থায়ী আদালত স্থাপন করা প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করতে হবে।
বর্তমানে যেসব উপজেলায় চৌকি আদালত পরিচালিত হয়, সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে সবগুলো চৌকি আদালতকে স্থায়ী আদালতে রূপান্তরিত করা প্রয়োজন, না কি সেক্ষেত্রেও পুনর্বিবেচনা ও পুনর্বিন্যাসের সুযোগ রয়েছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। বাস্তব পরিস্থিতির নিরিখে উপজেলা সদরে স্থাপিত কোনো আদালতের জন্য একাধিক উপজেলাকে সমন্বিত করে অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করা প্রয়োজন হলে, তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
উপজেলা আদালতগুলোতে সিনিয়র সহকারী জজ ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের বিচারকদের পদায়ন করতে হবে। দেওয়ানি মামলা গ্রহণে সিনিয়র সহকারী জজের আর্থিক এখতিয়ার বাড়িয়ে বাস্তবানুগ করাও প্রয়োজন। আইনগত সহায়তা কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারিত করতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, জেলা সদরের অতি কাছে যেসব উপজেলা সদর রয়েছে সেখানে অধস্তন আদালত প্রয়োজন হবে না। একইসঙ্গে জেলা সদরে উপজেলা অধস্তন আদালতের প্রয়োজন নেই। কোন উপজেলায় অধস্তন আদালত প্রয়োজন তার সংখ্যা নিরূপণের জন্য সমীক্ষার অনুরোধ করেন তিনি।