‘এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসাতে কেউ রক্ত দেয়নি’: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'কোনো দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য এই গণঅভ্যুত্থান হয়নি। কেউ রক্ত দেয়নি। এই আন্দোলন দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে—একটি বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে। কিন্তু এখনো সেই নতুন দেশ গড়ে ওঠেনি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তবেই আমরা ঘরে ফিরব।'
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেল ৩টায় গাইবান্ধা পৌর শহীদ মিনার চত্বরে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে হাজারো মানুষ রক্ত দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন—একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য। একটি এমন বাংলাদেশ, যেখানে বৈষম্য থাকবে না, থাকবে গণতন্ত্র। যেখানে মানুষ নির্ভয়ে কথা বলতে পারবে, মত প্রকাশে বাধা পাবে না, পুলিশের লাঠি বা গুলির মুখোমুখি হতে হবে না।'
নাহিদ ইসলাম বলেন, '২০২৪ সালের অভ্যুত্থান আমাদের ভয় কাটিয়ে দিয়েছে। আর কোনো ভয় বা দমন-পীড়নের সংস্কৃতি গড়ে উঠতে দেওয়া হবে না। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না। প্রয়োজনে আমরা আবারও রাজপথে নামব, রক্ত দেব। তবে বাংলাদেশকে এই অভ্যুত্থানের পথেই চলতে হবে।'
আওয়ামী লীগকে 'ফ্যাসিস্ট' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, 'জুলাই অভ্যুত্থানের সময় যারা গুলি চালিয়েছিল, হামলা করেছিল—তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভারত থেকেও ষড়যন্ত্র চলছে।'
গাইবান্ধার অবহেলিত অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'রংপুর বিভাগের দরিদ্র জেলা গুলোর মধ্যে গাইবান্ধা অন্যতম। এখানকার মানুষ দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার। আমরা আপনাদের পাশে থাকতে চাই, আপনাদের জন্য কাজ করতে চাই। তাই নতুন দেশ গড়ার ডাক দিয়েছি।'
সমাবেশ শুরুর আগে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা গাইবান্ধা শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল করেন এবং পরে শহীদ মিনার চত্বরে সমবেত হন। এরপর গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়ক হয়ে তারা রংপুর ফিরে যান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুরের পীরগঞ্জে অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন তারা। পরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পৌঁছালে স্থানীয় নেতারা ফুল দিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান।
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, সংগঠক নাজমুল হাসান সোহাগ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ এবং সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবসসহ স্থানীয় নেতারা।