সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে পাথর শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সিলেটের জাফলংয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেছেন পাথর শ্রমিকরা।
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে জাফলং পর্যটন এলাকা পরিদর্শনের পর দুই উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো আর খুলে দেওয়া হবে না। এ ঘোষণার পরপরই পাথর শ্রমিকরা জড়ো হয়ে তাদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে রাখেন তারা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলে উপদেষ্টারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'আকস্মিকভাবে কিছু লোক উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে মিছিল করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ দ্রুত তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে।'
গোয়াইনঘাট উপজেলার ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানান, উপদেষ্টাদের গাড়ি নিরাপদে জাফলং ছেড়ে গেছে। বর্তমানে তারা হরিপুর গেস্ট হাউসে অবস্থান করছেন।
জাফলং পরিদর্শনের সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, 'অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে জাফলং ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। জাফলংয়ের অবৈধ পাথর ক্রাশারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।'
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'সিলেটের আর কোনো পাথর কোয়ারি খুলে দেবে না সরকার। জাফলং পর্যটন কেন্দ্রকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে এ অঞ্চলের পাথর শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হবে।'
তিনি আরও জানান, জাফলং ইসিএ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও কেউ এরকম অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, জাফলং পরিদর্শনের পর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ও সাদাপাথর পর্যটন এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিলো পরিবেশ ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার। তবে নির্ধারিত এই সফর বাতিল করেন দুই উপদেষ্টা।
জানা গেছে, জাফলংয়ে পাথর শ্রমিকদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে উপদেষ্টাদের ভোলাগঞ্জ ও সাদাপাথর পরিদর্শন বাতিল করা হয়েছে।
তবে রিজওয়ানা হাসান জানান, বিক্ষোভের কারণে নয়, বরং সময়ের অভাবে ভোলাগঞ্জ ও সাদাপাথর যাওয়া হচ্ছে না।
বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'জাফলং গিয়ে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাই ভোলাগঞ্জ ও সাদাপাথর যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'চাহিদার মাত্র ৬ শতাংশ পাথর দেশের কোয়ারিগুলো থেকে উত্তোলন করা হয়। বাকিগুলো আমদানি করতে হয়। যেহেতু আমদানি করতে হচ্ছেই তাহলে মাত্র ৬ শতাংশের জন্য কেন পরিবেশ ধংস করবো?'
এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, 'পাথর পরিবহনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক মেরামতে যে টাকার প্রয়োজন হয় সেই পরিমাম টাকাও কোয়ারি থেকে রাজস্ব আদায় হয় না।'