স্মার্ট কার্ড জটিলতায় কয়েক মাস ধরে টিসিবির পণ্য পাচ্ছেন না চট্টগ্রামের কয়েক লাখ মানুষ

চট্টগ্রাম নগরীতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সুবিধাভোগীরা প্রায় পাঁচ মাস ধরে এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের আগের কার্ড বাতিল করা হলেও নতুন টিসিবি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় তারা টিসিবির সেবা থেকে বঞ্চিত থাকছেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ৩ লাখ ৯৬৩ জন নিম্ন-আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির সেবা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু ১০ জুন পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড সেবার আওতায় এসেছেন মাত্র ৮ হাজার মানুষ।
ফলে বন্দরনগরীর ২ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৩ জন মানুষ এখন টিসিবির সেবা থেকে বঞ্চিত।
অন্যদিকে যারা নগরের টিসিবির বিক্রয় কর্মসূচির সেবা নিতে পারছেন, তাদের অভিযোগ: কিছু কিছু জায়গায় সেবা চালু থাকলেও পণ্যের সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
নগরীর দামপাড়ার বাসিন্দা মো. মহসিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আগের টিসিবি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। আমরা এখনও স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পাইনি। যার কারণে আমরা সরকারের দেওয়া ন্যায্যমূল্যের পণ্য কিনতে পারছি না বেশ কয়েক মাস ধরে। আমরা চাই দ্রুত আমাদের কার্ডগুলো দেওয়া হোক।'
এদিকে টিসিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অফিস বলছে, সিটি কর্পোরেশন যথাযথভাবে সুবিধাভোগীদের তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি বলে কার্ড ইস্যু করতে দেরি হচ্ছে।
তবে বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করলেও সিটি কর্পোরেশনে বলছে, ওয়েবসাইটের সার্ভার জটিলতার কারণে তথ্য সরবরাহ করতে দেরি হচ্ছে।
অবশ্য দুই প্রতিষ্ঠানের দাবি, তারা আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সব স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের কাজ সম্পন্ন করবে।
কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় এত অল্প সময়ের মধ্যে তারা বাকি ২ লাখ ৮৭ হাজার কার্ড সরবরাহ করতে পারবে কি না সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
টিসিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অফিস প্রধান শফিকুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, নগরীতে টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ রয়েছে ৩ লাখ ৯৬৩টি। এখনও পর্যন্ত নগরীতে ১৩ হাজার ৮০০টি স্মার্ট কার্ড ঢাকা থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এ পর্যন্ত ৮ হাজার কার্ড 'অ্যাকটিভ' করেছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, কার্ডে তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়াটি একটু জটিল। তাই সুবিধাভোগীদের তথ্য আপলোডের সময় তাদের একটু ঝামেলা হয়েছে।
বর্তমানে টিসিবি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারীরা প্রতি মাসে একবার ৫৪০ টাকার পণ্য নিতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে ২ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন, ১ কেজি চিনি ও ৫ কেজি চাল।
২ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে দেশের ৫৭ লাখ পরিবারকে টিসিবি কার্ডের আওতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫ লাখ পরিবারকে টিসিবির আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।