প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয় অগ্রাধিকার পাবে

পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে বলেছেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীরা।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানিয়েছে, তার এ সফরে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এর পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে যাচ্ছেন।
এছাড়া, বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাতে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও অ্যাডভাইজারি সার্ভিস নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) জানিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
এ বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা সোমবার দুপুরে টিবিএসকে বলেন, 'যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের রিনিউয়েবল এনার্জিখাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এছাড়া আমাদের রিনিউয়েবল এনার্জিখাতে দেশটি এডভাইজারি সার্ভিস সরবরাহ করতে আগ্রহী।'
প্রধান উপদেষ্টার সফরকালে এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বলে জানান তিনি।
সরকারপ্রধানের সফরসূচি গত ৪ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক।
তিনি জানান, সফরকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে প্রধান উপদেষ্টার।
এছাড়া, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারের নীতি নির্ধারণী শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বাইরে প্রধান উপদেষ্টা আগামী ১১ জুন লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ আলোচনায় অংশ নেবেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে তার অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।
রুহুল আলম বলেন, মানুষ, প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে সঙ্গতিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা, সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনাচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা এবং একটি শান্তিপূর্ণ, সৌহার্দ্যময় ও টেকসই পৃথিবী বিনির্মাণের চলমান প্রচেষ্টায় অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস এ বছরের সম্মানজনক 'কিংস চার্লস থার্ড হারমোনি অ্যাওয়ার্ডের' জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে মনোনীত করেছেন।
আগামী ১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস'স প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
দ্য কিংস ফাউন্ডেশনের দেওয়া এই পুরস্কার ২০২৪ সালে পেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দ্য কিংস ফাউন্ডেশন ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১১ জুন সন্ধ্যায় আয়োজিত এক বিশেষ নৈশভোজে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা।আগামী ১৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।