বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচন চায় এনসিপি

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বাড়ানোর বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেইসঙ্গে দলটি বলেছে, তারা ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচন চায়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শেষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনীম জারা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তাসনীম জারা বলেন, 'আমাদের দলীয় অবস্থান ২৫ শতাংশ নারী আসনের বিষয়ে একমত। এই নারীরা নিজস্ব আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসবেন। সব মিলিয়ে ১০০ আসন থেকে নারীরা নির্বাচিত হয়ে আসবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'নিজ আসন থেকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এলে নারীরা কাজ করার সুযোগ পাবেন এবং তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব উঠে আসবে। পদ্ধতি নিয়ে আরো আলোচনা হতে পারে৷ বিএনপি শুধু সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০ বাড়াতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা চেয়েছি নির্বাচন।'
সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করলে নারীর ক্ষমতায়ন হবে না, বরং এটি আরও অন্তরায় সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে সংরক্ষিত আসন দেওয়া হয়, এটা আসলে প্রাইস পোস্টিং। বিগত সময়ে এখানে যোগ্য মানুষকে বসানো হয়েছে, তা দেখিনি। বরং দেখা গেছে, কোনো এক জায়গায় দল কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারেনি, তখন সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনের কাউকে সংরক্ষিত আসন দেওয়া হয়েছে। এতে নারীকে প্রকৃত ক্ষমতায়ন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়।
তিনি এও বলেন, মাঠপর্যায়ে নির্বাচন করে উঠে আসা আর সান্ত্বনা পুরস্কার নিয়ে উঠে আসার মধ্যে আকাশপাতাল পার্থক্য।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়ে সারজিস বলেন, অর্থবিল ও আস্থাভোট ছাড়া সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনে আমরা মত দিয়েছি। জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে একটি দলের পক্ষ থেকে অন্তর্ভুক্তির দাবি এসেছে। কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তার মাধ্যমে সব বিষয়কে সম্পর্কিত করা যায়। এর মাধ্যমে সাংসদের মত প্রদানের ক্ষমতা সংকুচিতই থাকবে।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে সারজিস বলেন, চারটি স্থায়ী কমিটি পাবলিক অ্যাকাউন্টস, প্রিভিলেজ, এস্টিমেট ও আন্ডারটেকিংস কমিটিতে বিরোধীদল থেকে সভাপতি নিয়োগে ঐকমত্য এসেছে।
'এর বাইরে আমরা মনে করি জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্রসহ আরো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিরোধীদল থেকে সভাপতি নিয়োগ করা যায়। প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে অন্যান্য দল থেকেও যেন সভাপতি নিয়োগ করা যায়, বিরোধীদল মানে যেন একটিমাত্র দল না বুঝায় সেটির বিষয়ে মত দেওয়া হয়েছে', যোগ করেন তিনি।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, 'কী কী বিষয় জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। এজন্য আমরা এটাকে লিগ্যালি বাইন্ডিং করার জন্য গগণভোট কিংবা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাব।'