রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রায় ৩০টি দলকে নিয়ে আলোচনা চলছে।
এর আগে গতকাল সোমবার ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই আলোচনা উদ্বোধন করেন।
আজকের আলোচনায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সংসদের নিম্নকক্ষে নারী আসনের নির্বাচন এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হবে।
ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী জানান, আলোচনা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে, যা সরকারি টেলিভিশন বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, 'আমরা চাই এমন কিছু ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল অন্তত ন্যূনতম পর্যায়ের ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে এবং সেগুলো সংরক্ষণ করা যায়। সেটাই এই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য।' তিনি বলেন, জাতীয় সনদে সবার সম্মতি থাকা প্রস্তাবগুলোকেই অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, 'কিছু বিষয়ে হয়তো একমত হওয়া যাবে। তবে প্রত্যেক দলই তাদের নিজ নিজ অবস্থান, দলীয় ইশতেহার এবং রাজনৈতিক অভিপ্রায় ধরে রাখবে। তবে কোনো দল যদি অতিরিক্ত কিছু যুক্ত করতে চায়, তাদের সেই মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকবে।'
আলী রীয়াজ আরও বলেন, 'জাতীয় সনদে আমরা কেবলমাত্র সেসব প্রস্তাবই অন্তর্ভুক্ত করতে চাই, যেগুলোতে আপনাদের সম্মতি থাকবে। আমরা আলাদাভাবে প্রতিটি দলের সঙ্গে আলোচনা না করে সম্মিলিত সংলাপের পথ বেছে নিয়েছি, যাতে পারস্পরিক যুক্তি-বিশ্লেষণের মাধ্যমে অবস্থানে পরিবর্তন আসতে পারে। সেই বিবেচনায় একটি কাঠামো দাঁড় করাতে চাই আমরা।'
তিনি বলেন, 'প্রতিটি বিষয়ে একমত হওয়া না গেলেও, আমাদের কিছু উপসংহার টানতেই হবে—বিশেষ করে সময়ের সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে। আমাদের লক্ষ্য হলো জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদটি চূড়ান্ত করা।' তিনি বলেন, 'সেই সনদে কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে, আর কোনটি হবে না, সে সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে। যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত হবে না, সেগুলোকেও উল্লেখ করা হবে "আলোচিত হলেও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি"—এই বিবেচনায়।'
আজকের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ লেবার পাটি, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, আমজনতার দল, ভাসানী অনুসারী পরিষদ/ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট।