সিলেটে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি

সিলেটে বৃষ্টি থামছেই না বরং প্রকোপ আরও বেড়েই চলছে। শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে রেকর্ড ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভারী বৃষ্টি ও ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোমধ্যে বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি। রোববার (১ জুন) সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও অন্যান্য নদ-নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, ২৪ ঘণ্টার হিসেবে ৪০৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। এরপর রোববার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত আরও ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী সকাল ৯টায় সুরমা নদী সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা আগেরদিন সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।
একই সময়ে কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসীদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা আগেরদিন বিপৎসীমার ১৮৭ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। এছাড়াও সকাল ৯টায় সুরমা নদী সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এসময় কুশিয়ারা নদী বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
এদিকে ভারি বর্ষণের ফলে রোববারও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নগরীর অর্ধশতাধিক এলাকা তলিয়ে গেছে। এনিয়ে গত ২০ দিনে নগরে অন্তত ৫ বার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

এছাড়া জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন একটি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলায় ৫৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবকসহ সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।