‘ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে’: আমীর খসরু

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ শনিবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, 'ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। যেখানে যাই, সবাই বলছে নির্বাচন কবে? আমি বলছি, ডিসেম্বর; কেনো সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নয়। আমি একটা নির্বাচিত সরকার দেখতে চাই। নির্বাচিত বিরোধী দল, নির্বাচিত সংসদ দেখতে চাই।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি একটা নির্বাচিত সরকার দেখতে চাই। যদি কেউ বলেন, শুধু একটি দল নির্বাচন চায়, এটা কী সত্য? ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, এমন ৫২টা রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এধরনের একটা বক্তব্য কি অর্থবহন করে?'
একইদিনে পৃথক আরেকটি অনুষ্ঠানে করিডোর নিয়ে সরকারের মধ্যে এখনো আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যানালিসিস আয়োজিত 'বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক নিরাপত্তা: প্রেক্ষিত মানবিক করিডোর' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন, 'করিডোর নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার নয়। শুরুতে বলা হয়েছিল, করিডোরের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে বলা হচ্ছে, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এবং হবেও না। অথচ আমরা দেখছি, করিডোর নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে। দুই-তিনদিন আগেও কাতারে এ বিষয়ে একটি সম্মেলন হয়েছে। কেউ ভাবতে পারেন, ইস্যুটি শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু তা হয়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'করিডোর বিষয়টি সরকারের এখতিয়ারে নেই। এতো গোপনীয়তা কেন, সেটাও স্পষ্ট না। যখন এটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, তখন 'চ্যানেল' শব্দটি আনা হয়।'
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে পাঠাতে করিডোরের প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আগেও তো রোহিঙ্গারা ফেরত গেছে। আইনগতভাবে রোহিঙ্গাদের পাঠানো উচিত। বাংলাদেশ কোনো প্রক্সি যুদ্ধে জড়াবে না, কারণ এটির মূল্য বাংলাদেশ দিতে পারবে না।'
গোলটেবিল আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'একটা করিডোর দিলে, সেটা হ্যান্ডেল করবে কে? বাংলাদেশ কি পারবে? আমি মনে করি পারবে না। এটা বড় ধরনের নিরাপত্তা ইস্যু। এ ইস্যু বাজারে ছাড়ার পর জনগণের প্রতিক্রিয়া না পেয়ে সরকার অস্বীকার করেছে। এটা রাষ্ট্রীয় প্রতারণার শামিল। এখানে গোপন কোনো এজেন্ডা থাকতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'একটা পার্টি নয়, অনেকগুলো পার্টি ডিসেম্বরে ভোট চায়। আমিও মনে করি ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া সম্ভব। দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে ভালো একটি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে।'
আলোচনায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টাকে স্পষ্টভাবে বলতে হবে, এটা করিডোর, না চ্যানেল। এটি এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় নয়, সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, 'বিশ্বজুড়ে করিডোর নিয়ে অভিজ্ঞতা ভালো নয়। বসনিয়া থেকে শুরু করে সিরিয়া পর্যন্ত সব উদাহরণই নেতিবাচক। মিয়ানমারের পাশে চীন ও ভারত রয়েছে, জাতিসংঘ যেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে। তারা বড় রাষ্ট্র, সামাল দিতে পারবে।'
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর বলেন, 'আমরা কতটা মানবিক হবো, সেটা নির্ভর করে আমাদের সক্ষমতার উপর। করিডোর দেয়ার মতো সক্ষমতা আমাদের আছে কি না, তা দেখতে হবে। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু ভুয়া এনআইডি, মাদক—এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তাই এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না, যেটা সামলানোর সক্ষমতা আমাদের নেই।'