সুন্দরবনে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত মিঠা পানির পাঁচ পুকুর, দুটি হরিণের মরদেহ উদ্ধার

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বনের ভেতর করমজল, সুপতি, ভোলা, কটকা, দুবলা এলাকায় ৫টি মিঠা পানির পুকুরে লবণ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। যার ফলে ওই এলাকার বন্য প্রাণীদের মিঠা পানির উৎস বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়া বনের শ্যালার চর এলাকা থেকে ভেসে যাওয়া একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দুবলার চর এলাকা থেকে দুটি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করেছেন বনরক্ষীরা। নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত—বাগেরহাটে নিরবিচ্ছিন্ন বৃষ্টি ও মাঝারি ধরণের ঝড়ো হাওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, এবার আমাদের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ৫টি পুকুরে লবণ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। যার ফলে বন্য প্রাণীদের পানি খাওয়ার অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া স্রোতের তোড়ে ভেসে যাওয়া অবস্থায়, আমরা একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করেছি। দুবলার চর এলাকা থেকে দুটি মৃত হরিণ উদ্ধার করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। ধারণা করছি, লবণ পানি খেয়ে সাঁতরে সাঁতরে হরিণ দুটির মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লবণ পানিতে নিমজ্জিত হওয়া পুকুরগুলোর পানি বন্য প্রাণী ছাড়াও বন বিভাগের কর্মীরা ব্যবহার করেন। স্বল্পসময়ের মধ্যে বৃষ্টিতে পুকুরের পানি মিষ্টি নাহলে সেচের মাধ্যমে মিঠা পানি সরবরাহ করা হবে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।
এদিকে বলেশ্বর ও ভোলা নদীর পানিতে, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের মূল বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী-বগী ভারাণী খালের পাশের রিং বাঁধের দুটি স্থানের ১০০ ফুট ভেঙে গেছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, জলোচ্ছ্বাসের জোয়ারের পানির চাপে খুড়িয়াখালী গ্রামের চুন্নু ফকিরের বাড়ির সামনে থেকে ৬০ ফুট এবং শাহজাহান মোল্লার বাড়ির সামনে থেকে ৪০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। ভাঙন থেকে দিনে জোয়ারে পানি ঢুকে শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। দুর্যোগ কেটে গেলে সরকারি বরাদ্দ থেকে ভেঙে যাওয়া অংশ মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।
তবে এবারের ঝড়ে বাগেরহাটে বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এবার জেলায় কোন বসতঘরের ক্ষতি হয়নি।
মৎস্য ঘেরেরও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আবুল কালাম আজাদ।