চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় ১৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, পাহাড় ধসের শঙ্কা, ফ্লাইট বিলম্ব

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিমান চলাচল বিলম্বিত হয়েছে। আর সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে স্থলভাগে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাঈল ভূইয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'সমুদ্রে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপকূল রেখা অতিক্রম করেছে। বর্তমানে এটি স্থল ভাগের রাজশাহী অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাগর উত্তাল আছে।
তিনি আরও বলেন, 'শুক্রবার বেলা ১২টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর একই সময় থেকে আগের ৪৮ ঘণ্টায় ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরো দুদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে।'
অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও এর আশপাশের অঞ্চলে পাহাড় ধসের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে বলে জানান এই আবহাওয়া বিষয়ক কর্মকর্তা।
এদিকে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেনে বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল।
তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৪ মিনিটের ফ্লাইটটিতে যাত্রায় কয়েক ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে। বিজি১৪৭ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ঢাকা) থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। তবে চট্টগ্রামে খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফ্লাইটটি ঢাকায় ফিরে যায়।
রাত কাটিয়ে ফ্লাইটটি সকাল ৪টা ১৬ মিনিটে পুনরায় চট্টগ্রামে অবতরণ করে এবং আবহাওয়ার উন্নতি হলে আজ শুক্রবার সকাল ৫টা ৩১ মিনিটে দুবাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে।
এদিকে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। হাটহাজারীর কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নগরীর আকমল আলী সড়কে ঝোড়ো হাওয়ায় অনেক টিনের ঘরের চালা উড়ে গেছে। বেশকিছু জায়গায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে।
অতি ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই প্রধান সড়কের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় দুইটি গাছ ও একই সড়কের মরিয়মনগর কাটাখালী এলাকায় রাস্তার উপর একটি গাছ পড়ে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস টিম রাস্তা হতে গাছগুলো অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, 'নগরীতে তেমন জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি। কাপ্তাই রাস্তার মাথায় ফুটওভার ব্রিজের কাজ চলছে। সেজন্য জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এটি সমাধান করতে বলেছি। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের আগামীকাল হয়তো সরিয়ে নেওয়া হবে।'