চাকরি সংশোধনী বাতিলের দাবিতে কাল থেকে সচিবালয়ে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি

'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করবেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সময়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কার্যালয়সহ মাঠপর্যায়ের দপ্তরগুলোতেও এই কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী সংগঠন 'বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম'-এর পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংগঠনটির নেতারা জানান, দাবি পূরণ না হলে ৩১ মে-র পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর সংশোধিত অধ্যাদেশকে 'অবৈধ কালো আইন' উল্লেখ করে বলেন, ''এটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ব্যাপারে আমরা একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে কর্মচারীদের সন্তোষজনক সমাধান মিলবে।''
তিনি জানান, আসন্ন ঈদ, বাজেট এবং চলমান আলোচনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে তারা আপাতত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের দপ্তরগুলোতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে জরুরি সেবার ক্ষেত্রে কর্মবিরতির সময়সীমা আধা ঘণ্টায় সীমিত রাখার অনুরোধ জানান তিনি।
ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মুহা. নূরুল ইসলাম বলেন, ''৩১ মে পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। এরপর দাবি পূরণ না হলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই।''
এদিকে বুধবার সকালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এ এম এম সালেহ আহমেদের নেতৃত্বে কয়েকজন সচিব আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদের কাছে উপস্থাপন করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব তা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার সচিবালয়ে আন্দোলনকারী কর্মচারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন এই সচিবরা। ওই বৈঠকের পর আন্দোলনকারীরা বুধবারের কর্মসূচি একদিনের জন্য স্থগিত করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে 'সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫'-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর রোববার সন্ধ্যায় সরকার এই অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে গত শনিবার থেকে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিপুলসংখ্যক কর্মচারী বিক্ষোভ ও সমাবেশে অংশ নেন। তাঁরা এই অধ্যাদেশকে দমনমূলক ও 'কালো আইন' আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন।