শেরপুরে উপদেষ্টা রিজওয়ানার গাড়িবহরে হামলার খবর ‘বিভ্রান্তিকর ও সত্যনির্ভর নয়’: মন্ত্রণালয়

আজ (২৬ মে) শেরপুরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে তার গাড়িবহরে হামলার যে গুজব ছড়িয়েছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আজ বিকেলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'এটা একেবারেই সত্য নয়। আমি শুনেছি, আমার যাওয়ার পরে সাংবাদিক ও স্থানীয়দের মধ্যে বালু উত্তোলন নিয়ে প্রশ্ন করাকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটি হয়েছে। তবে সেটির সঙ্গে আমার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি তখন শেরপুর পেরিয়ে ময়মনসিংহ পৌঁছে গেছি। এসব ঠিক নয়।'
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এ বিষয়ে কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিজওয়ানা হাসান পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শেরপুর সফর করেন। সফর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি মধুটিলা রেঞ্জে একটি দীর্ঘমেয়াদি বৃক্ষরোপণ প্রকল্প পরিদর্শনে যান।
'সম্পূর্ণ সফর শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি,' বলা হয় মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
মানব-হাতি দ্বন্দ্বে টেকসই সমাধানে কাজ করছে সরকার
শেরপুরের মধুটিলা ইকোপার্কে মানব-হাতি দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চেক বিতরণ ও মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, 'এ ক্ষেত্রে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। মানুষ এখন হাতির আবাসস্থল দখল করে নিচ্ছে। এতে তাদের খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে। ইউক্যালিপটাসসহ বিদেশি গাছ না লাগিয়ে আমাদের ফলদ ও দেশীয় গাছ লাগাতে হবে, যেগুলো হাতির খাদ্য সরবরাহ করে।'
'হাতির জীবনও মানুষের জীবনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। বন ধ্বংস হলে আমরাও টিকব না। সরকার এখানে প্রতিপক্ষ নয়, সহায়ক। তাই বাণিজ্যিক বৃক্ষরোপণের পরিবর্তে প্রাকৃতিক বন ফিরিয়ে আনতে হবে,' বলেন রিজওয়ানা।
তিনি জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মানব-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক তোরাফদার মাহমুদুর রহমান, মধ্যাঞ্চলের বন সংরক্ষক এ এস এম জাহিদ উদ্দিন আকন, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, বিজিবি কমান্ডার লে. কর্নেল তানভীর হোসেন মজুমদার, ইআরটি সদস্য ইমতিয়াজ আলী ও মোহাম্মদ হাশমত আলী।
অনুষ্ঠানে দুই হাতির আক্রমণে নিহতের পরিবারকে মোট ছয় লাখ টাকা এবং ফসল ও সম্পত্তির ক্ষতির জন্য ১৫টি পরিবারকে মোট ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
এছাড়া হাতি প্রতিরোধ দলের (ইআরটি) সদস্যদের মাঝে দূরবীন, টর্চলাইট, হ্যান্ড মাইক, বাঁশিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বিতরণ করেন উপদেষ্টা।
এর আগে তিনি নালিতাবাড়ী উপজেলার দৌধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মধুটিলা রেঞ্জের দীর্ঘমেয়াদি বৃক্ষরোপণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন।