আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে ‘কয়েকটি কথায়’ যে ইঙ্গিত দিলেন মাহফুজ আলম

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্রদের বিক্ষোভের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটি ফেসবুক পোস্টে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
গতকাল (৮ মে) রাত থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন 'যমুনা'র সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বিক্ষোভে সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি ও ছাত্র-জনতাকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে 'কয়েকটি কথা' শিরোনামে দেওয়া পোস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া নিয়ে মিথ্যাচার চলছে। তিনি লেখেন, 'একটি দলের এক্টিভিস্টরা বলছেন, ছাত্ররা এই আইনি প্রক্রিয়ায় রাজি ছিল না। এটা মিথ্যা। ক্যাবিনেটের প্রথম সভাতেই আমি অনেকগুলো ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম।'
তিনি জানান, অন্য উপদেষ্টারাও তার অবস্থানের পক্ষে ছিলেন। 'নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিল। একজন উপদেষ্টা তখন ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মত উদাহরণ টেনে এর বিরোধিতা করেন। এখন সেই যুক্তির পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, অথচ তার সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।'
পোস্টে মাহফুজ আরও লেখেন, 'দুইজন আইনপেশায় অভিজ্ঞ উপদেষ্টা, যাদের একজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন, আমাদের অবস্থানের পক্ষে ছিলেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টাও ছিলেন আমাদের সঙ্গে। তিনি গতকাল জানান, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রভিশন শিগগির যুক্ত করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।'
তিনি অভিযোগ করেন, 'ঘোষণাপত্র নিয়ে দুই মাস ধরে টালবাহানা চলছে। দলীয় বয়ানের একটি খসড়া ঘোষণাপত্র নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছিল, এখন সেটাও অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। আমরাও ভুল করেছি, কারণ আমরা আপনাদের দলের প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।'
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, 'আমরা নির্বাচন পেছাতে চাই না। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবেই।'
ছাত্র রাজনীতির প্রেক্ষিতে মাহফুজ লেখেন, 'আপনারা যদি ভাবেন ছাত্ররা নিজস্ব আদর্শ গ্রহণ করতে পারে না, তাহলে আপনারা তাদের খাটো করছেন। আমরা আগস্ট থেকেই সব সিদ্ধান্ত সবার পরামর্শ নিয়ে নিয়েছি, সবচেয়ে বেশি পরামর্শ নিয়েছি সেই দলের সঙ্গেই। বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব। সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ! ''
তিনি লেখেন, 'আমরা এখনো উক্ত দল ও তাদের প্রধানকে বিশ্বাস করতে চাই। আমরা আশাবাদী যে তারা লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে এবং ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও বাস্তববাদী ভূমিকা নেবেন।'
পোস্টের শেষে মাহফুজ আলম বলেন, 'ঐক্যবদ্ধ হোন। নেতৃত্ব দিন। এ প্রজন্ম যেন হতাশ না হয়। তারা-ই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।'