রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে শুধু দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সমাধান আসবে না: তৌহিদ হোসেন

রোাহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারের সঙ্গে কেবল দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কোনো সমাধান আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, আমরা কূটনীতি ত্যাগ করতে পারি না, কিন্তু আমাদের এই আশা ছেড়ে দিতে হবে যে শুধু দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সফল হবে না।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আঞ্চলিক নিরাপত্তায় কৌশলগত প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ' শীর্ষক সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
শুরুতে এই সংকট মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ওপর নির্ভরতার সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, তিনিসহ অনেকেই সতর্ক করেছিলেন যে এ ধরনের প্রচেষ্টা নিষ্ফল হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যেকোনো প্রত্যাবাসন অবশ্যই স্বেচ্ছায় হতে হবে এবং নিরাপত্তা ও পূর্ণ নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তারা এমন জায়গায় ফিরে যাবে না যেখানে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের অধিকার অস্বীকার করা হয়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, 'আমরা কোনো অযৌক্তিক প্রত্যাশা করছি না। আমরা কি তাদের সেখানে ফেরত পাঠাবো, যেখানে তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে?'
মিয়ানমারে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বাস্তব পরিবর্তন আনতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'এটি একটি কঠিন এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। ঐক্য ছাড়া এটি অর্জন করা সম্ভব নয়।' একইসঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে একটি রোডম্যাপ থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা আরও বলেন, মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের মধ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা না থাকায় এ সময়ের মধ্যে তাদের প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি এবং ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টকে (এনইউজি) মিয়ানমারের প্রধান অংশীজন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেকোনো স্থায়ী সমাধানে অবশ্যই এই তিনটি পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে আরাকান আর্মিকে, যারা এখন রাখাইন (আরাকান) রাজ্যের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।