ওভারটাইম ভাতা ও আবাসন সুবিধা চায় পুলিশ

পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫-এর দ্বিতীয় দিনে ওভারটাইম ভাতা ও সরকারি আবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু দাবি তুলেছেন মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। বুধবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব দাবি উত্থাপন করা হয়।
বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি তোলা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে ওভারটাইম ভাতা চালুর প্রস্তাব। পাশাপাশি মামলা তদন্তের জন্য সরকার যে অর্থ বরাদ্দ দেয় তা অপ্রতুল উল্লেখ করে তদন্ত ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাবও তোলা হয়েছে। এছাড়া এক পুলিশ কর্মকর্তা সরকারি আবাসন সুবিধারও দাবি তুলেন।
মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তারা প্রতিদিন নির্ধারিত ৮ ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করেন, কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের কোনো ভাতা তারা পান না।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রতিদিনই নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে। তবুও পুলিশের কারো জন্য কোনো ওভারটাইম ভাতা নেই। তিনি কনস্টেবল থেকে আইজিপি পর্যন্ত সবার জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে ভাতা চালুর আহ্বান জানান।
এছাড়া সরকারি আবাসন সুবিধা থেকেও পুলিশ সদস্যরা বঞ্চিত—এমন অভিযোগ তোলেন পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি আবাসন সুবিধা পেলেও পুলিশ এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ফলে মাঠপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের আবাসন সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান মামলার তদন্ত খরচ নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, সরকার থেকে মামলার জন্য যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। অনেক সময় তদন্ত কর্মকর্তাদের নিজের পকেট থেকে ব্যয় করতে হয়। তাই বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।
বৈঠকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জনবল সংকটের কথা তুলে ধরে তা বাড়ানোর দাবি জানান। অপরদিকে সিআইডির পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এর আগে দিনভর সিআইডি, র্যাব, পিবিআই, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এন্টি টেররিজম ইউনিট, হাইওয়ে পুলিশ, এপিবিএন, রেলওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ তাদের ইউনিটভিত্তিক সাফল্য ও দীর্ঘদিনের সংকট তুলে ধরে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। সভায় সভাপতিত্ব করেন আইজিপি বাহারুল আলম। এছাড়া স্বরাষ্ট্র, আইন, গৃহায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন।