নন–ক্যাডারে দ্রুত নিয়োগে আরেকটি পিএসসি গঠনের উদ্যোগ সরকারের

নন–ক্যাডারসহ অন্যান্য গ্রেডে দ্রুত নিয়োগের লক্ষ্যে একটি নতুন সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
এই লক্ষ্যে গত ২৩ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে নন–ক্যাডারসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়োগের জন্য পৃথক পিএসসি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কারে গঠিত জনপ্রশাসন বিষয়ক সংস্কার কমিশন তিনটি পিএসসি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে।
সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি গত ২০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভায় নন–ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য পৃথক পিএসসি গঠনের সুপারিশ করে। প্রধান উপদেষ্টা ২১ এপ্রিল প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছেন।
কমিটির একজন সদস্য গতকাল (মঙ্গলবার) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "নন–ক্যাডার নিয়োগে পৃথক পিএসসি কীভাবে গঠন করা যেতে পারে, সে বিষয়ে সুপারিশ দেবে এই কমিটি। জনবল কাঠামোসহ যেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে, সেসব বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনাসহ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।"
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্যাডার সার্ভিস ও নন–ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগের জন্য দুটি পৃথক পিএসসি গঠন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে দুটি কমিশন একীভূত করা হয়। তবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে একাধিকবার তাগাদা দিয়েও ফাঁকা পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় আবারও আগের মতো দুটি পিএসসি গঠনের পথে হাঁটছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৭৩ হাজার পদ শূন্য ছিল। কর্মকর্তাদের ধারণা অনুযায়ী, বর্তমানে এই সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত ২৭ এপ্রিল একটি ফেসবুক পোস্টে জানান, সর্বশেষ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পিএসসি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিয়ম ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সরকার দুটি পিএসসি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নতুন পিএসসি গঠনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগ, সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ এবং ঊর্ধ্বতন নিয়োগ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব; প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগ, আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্ম সচিবদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিবকে কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন তিনটি পিএসসি গঠনের সুপারিশ করে:
১. পাবলিক সার্ভিস কমিশন (সাধারণ) — শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ছাড়া অন্য সব সার্ভিসে নিয়োগ ও পদোন্নতি পরীক্ষা গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত।
২. পাবলিক সার্ভিস কমিশন (শিক্ষা) — শুধু শিক্ষা সার্ভিসে নিয়োগ ও পদোন্নতি পরীক্ষা গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত।
৩. পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য) — শুধু স্বাস্থ্য সার্ভিসে নিয়োগ ও পদোন্নতি পরীক্ষা গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত।