‘চোখের পলকে সব ঘটে গেল’: চলন্ত গাড়ি থেকে ছিনতাইয়ের শিকার প্রাণে বেঁচে যাওয়া সেই নারী

একটি ট্রেইনিংয়ে অংশ নিতে শনিবার দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ফারহানা আখতার জাহান। তখনই রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়ই শিকার হন ভয়াবহ ছিনতাইয়ের।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফারহানা বলেন, "আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব কিছু কেমন এক ঝটকায় ঘটে গেল।" গত শনিবার একটি চলন্ত গাড়ি থেকে এক ছিনতাইকারী ফারহানার ব্যাগ টেনে ধরলে তিনি পড়ে যান এবং গাড়ির সঙ্গে তাকে কিছু দূর টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ফারহানা বলেন, "সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল আমি হয়ত মরে যাবো। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমি প্রাণে বেঁচে গেছি।"
ফারহানা গাজীপুরের একটি কলেজের শিক্ষিকা। তিনি তার স্বামী মোস্তাফা সরোয়ার ও দুই কন্যাসন্তানকে নিয়ে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে থাকেন।
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং দিনের বেলায় প্রকাশ্যে জননিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। পাশের বিল্ডিং থেকে একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ফারহানা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় একটি সাদা গাড়ি এগিয়ে আসে। গাড়ির ভেতর থেকে একজন হাত বাড়িয়ে তার ব্যাগ ধরে টান দেয়।
ব্যাগ টানার সাথে সাথে ফারহানা মাটিতে পড়ে যান। গাড়িটি না থেমে তাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ফারহানা জানান, তার পেট ও পায়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন তিনি। তবে আহত অবস্থাতেও তিনি ট্রেনিংয়ে যাচ্ছেন।
ফারহানা বলেন, "আমার ট্রেনিং চলছে। আমার খুব চাপ যাচ্ছে। সামনে একটি পরীক্ষা রয়েছে, এজন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতেও পারিনি। ঘটনার পর সরাসরি ট্রেনিং সেন্টারে চলে এসেছি। এরপর আর কিছু করার সময় পাইনি।"
আইনগত পদক্ষেপের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমাকে কেন মামলা করতে হবে? সরকার বা পুলিশ নিজেরাই তো করতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "আমার চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের জন্য সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। ঢাকার বাইরে থাকার কারণে এখনও করতে পারিনি। ঢাকায় ফিরে সম্ভবত বুধবারের মধ্যে জিডি করবো।"
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ আল মামুন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, "ভুক্তভোগী বর্তমানে শহরের বাইরে থাকায় এখনো মামলা করতে পারেননি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা অপরাধীদের শনাক্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। একবার শনাক্ত করতে পারলে, আমরা নিজেরাই মামলা করবো।"
অপরাধীদের বিষয়ে তিনি বলেন, "অপরাধীরা বেশ ধূর্ত। ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটির নম্বরপ্লেট ছিল না।"