সোনারগাঁয়ে বাবাকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল; ছেলে গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাবাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগে জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৮ এপ্রিল) উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়াচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুক্তভোগীর নাম আব্দুর রহিম।
গত রোববার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নিজের বাবাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনা ঘটে। ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুর রহিমকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করে তারই ছেল জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার।
নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বৃদ্ধ আব্দুর রহিমের দুই ছেলে জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে মারধর করছেন। ঘটনাটি দেখে ভিডিও ধারণ করছেন প্রতিবেশীরা।

স্থানীয়রা জানায়, আষাঢ়িয়াচর গ্রামের ৭০বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুর রহিম প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ে করার পর থেকে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। সম্প্রতি আব্দুর রহিম তাদের বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। রবিবার দুপুরে বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ির বিক্রির কারণ জানতে চান।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছেলে জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার বাড়ির সামনে পিটিয়ে আহত করে। এসময় আহত আব্দুর রহিমের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে তার ছেলে মেয়েরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এরপর ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম সোনারগাঁ থানায় অভিযুক্ত ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, 'তাদের গ্রামে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা এই প্রথম। এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাবাসী হিসেবে আমরা লজ্জিত। ওদের বিচার হওয়া উচিত।'

অভিযুক্ত ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, তাদের বাড়ি বাবা বিক্রি করে দিতে চান। এ বাড়ি বিক্রি করে দিলে তাদের বসবাসের কোনো স্থান থাকবে না। বাড়িটি বিক্রি না করার জন্য তার বাবাকে অনুরোধ করেন। অনুরোধ না শোনার কারণে রাগের বশে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। এভাবে মারধরের জন্য তারা অনুতপ্ত।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, 'জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবাকে কুপিয়ে জখম করায় ছেলে জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।'