৩১ দফার মাধ্যমে বিএনপি প্রতিশোধ নয়, সংস্কার চায়: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা জুলুম করব না, প্রতিশোধ নেব না। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, '১/১১-র পর গত ১৫–১৬ বছর ধরে আপনারা অমানবিক নির্যাতন, মিথ্যা মামলা, পুলিশের হয়রানি এবং স্বেচ্ছাচারী শাসকদের সহযোগীদের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন...কিন্তু আমরা জুলুম করবনা, প্রতিশোধ নেবো না। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আমরা দেশের জনগণের কাছে রাষ্ট্রের আগামী কাঠামো তুলে ধরব। জনগণ যাতে আগামী দিনে বিএনপির উপর আস্থা রাখতে পারে। তাই জনগণের আস্থা ধরে রাখতে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।'
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি আয়োজিত নীলফামারী, রংপুর ও সৈয়দপুর জেলায় রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃত্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেবে। এছাড়া কৃষিকে আধুনিকায়ন ও কৃষকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে। উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিএনপি যুবকদের পাশে থাকবে এবং উদ্যোক্তাদের পণ্য বিদেশি রপ্তানি করা হবে। এরফলে দেশের চাহিদা যেমন মিটবে তেমনি আর্ন্তজাতিক ভাবেও বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করবে।'
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমাদের সফলতা অর্জন করতে হলে এখনও অনেক পরিশ্রম করতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। এ দায়িত্ব নিতে হবে জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের।'
তিনি বলেন, 'আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবো। কেন না আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের সঙ্গে কমিটমেন্ট করেছি। দেশের মানুষের কাছে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে ৩১ দফার কর্মশালার আলোচনা পৌঁছে দিবেন।'
জনগনকে সাথে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এক কাতারে কাজ করতে নেতাকর্মীদের শপথ নিতে বলেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, জনগণ আমাদের নির্বাচিত করলে আমরা জনগনের উন্নয়নে ৩১ দফা বান্তবায়ন করতে সক্ষম হবো।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সফলতা অর্জন করতে হলে এখনও অনেক পরিশ্রম করতে হবে। আপনাদের অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা জনসমর্থনবিরোধী কাজ করবেন, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আমাদের অর্জন বৃথা হয়ে যাবে।'
এর আগে তিনি ভার্চুয়ালি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া নেতাকর্মী প্রশ্ন ও প্রস্তাবনা শুনে উত্তর দেন। এসময় তারেক রহমান কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নের পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন। বলেন, 'বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি লোক বেকার। তাই কারিগরি প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা তৈরি ও বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।'
এ দিকে সকাল সাড়ে ১০টায় নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এ সময় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জবি উল্লাহ, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা, স্থানীয় সরকারবিষয়ক সহসম্পাদক শাম্মী আক্তার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ. খ. ম আলমগীর সরকার ও সঞ্চাললনা করেন সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম। কর্মশালায় অংশ নেন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের প্রায় ৬ শতাধিক নেতা।