মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে অর্থায়ন করবে জাইকা, চুক্তি সই

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে অর্থায়ন করবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই করেছে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান এবং জাপানের পেন্টা ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার তোমোকাজু হাসেগাওয়া চুক্তিতে সই করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এবং জাপানের দু'টি শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও টিওএ কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে এই চুক্তি সই হয়।
জাইকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দৃশ্যপট পাল্টে দেবে। এটি কেবল একটি অবকাঠামোগত প্রকল্প নয়, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলগত বিনিয়োগ।
তিনি আরও বলেন, বন্দরটি চালু হলে প্রায় এক লাখ ডেডওয়েট টন (ডিডব্লিউটি) ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। ফলে চট্টগ্রামসহ অন্যান্য বন্দরের ওপর চাপ কমবে, সরবরাহ শৃঙ্খলা হবে গতিশীল এবং কক্সবাজার-মহেশখালী অঞ্চলে নতুন শিল্পাঞ্চলের প্রবেশাধিকার সহজ হবে। এর ফলে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও ট্রান্সশিপমেন্ট হাবে পরিণত হবে।
জাপানি সংস্থাটি বন্দর নির্মাণের 'প্যাকেজ-১' এর অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়ন করবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি এবং ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া টার্মিনাল ভবন, পেভমেন্ট, সি ওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, ভূমি উন্নয়ন, ড্রেজিং, সৌরবিদ্যুৎসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বন্দরটি ১৪.৫০ মিটার ড্রাফট ও ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের মোট ৮ হাজার ২০০ টিইইউস ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হবে।
আশা করা হচ্ছে, ২০২৯ সালের মধ্যে ৬ লাখ থেকে ১১ লাখ টিইইউএস এবং ২০৪১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ১৪ লাখ থেকে ৪২ লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা যাবে এই গভীর সমুদ্রবন্দরে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে ৩০-৩২ লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, জাপান দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং জাইকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।