সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক, ওষুধশিল্পে পরনির্ভরতা কমাতে গুরুত্ব

বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প এখনও বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এ অবস্থার পরিবর্তনে স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন ও ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ লক্ষ্যে নীতিগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও একমত হয়েছে তারা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকার মিরপুরে বিআইএইচএস জেনারেল হাসপাতালে এক বৈঠকে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বাংলাদেশ অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্টস অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়েটস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাইমা) প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ বৈঠকে তিনি ওষুধ শিল্পে আত্মনির্ভরতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কমিশনের রূপরেখাও তুলে ধরেন।
বৈঠকে এ কে আজাদ খান বলেন, "ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত ৯৫ শতাংশ কাঁচামাল এখনও আমদানি করতে হয়। হাতেগোনা কয়েকটি দেশ এই কাঁচামাল উৎপাদন করে থাকে। দেশেই কাঁচামাল তৈরি হলে ওষুধশিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে। এমনকি, উৎপাদিত কাঁচামাল বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।"
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের এদিকে নজর রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, "ওষুধশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশীয় ব্যবস্থাপনায় কাঁচামাল তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হবে।"
বৈঠকে বিএআইএমএর সভাপতি এস এম সাইফুর রহমান বলেন, "ওষুধের কাঁচামাল শিল্প প্রসারে ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুর তাদের ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিয়েছে। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষা ও অনুমোদন প্রক্রিয়াও সহজ করেছে। আমাদেরও এমন নীতি সহায়তা প্রয়োজন।"
এ সময় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তিনি স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন প্রধানের কাছে বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে—ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদন, গবেষণা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রণোদনা; দেশীয়ভাবে কাঁচামাল উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের গ্যাস ও বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়া; যেসব ওষুধের কাঁচামাল দেশে তৈরির সক্ষমতা রয়েছে, সেসব কাঁচামাল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা; নিবন্ধন ও অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত ওষুধের কাঁচামাল যারা ক্রয় করবে তাদের ভ্যাট মওকুফ সুবিধা নিশ্চিত করা; একইসঙ্গে ঔষধ প্রশাসনের ব্লকলিস্ট কমিটিতে বিএআইএমএ-র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডের এম জামাল উদ্দিন, সোডিক্যাল মেডিকেলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, নিপ কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, ওয়ার্ল্ড এপিআই কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের প্লান্ট ডিরেক্টর জাকির হোসেন এবং ডায়াবেটিকস সাইন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ মাহমুদ।