বগুড়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬

বগুড়ার জলেশ্বরীতলা এলাকায় জেলখানার মোড়ে দুই সাংবাদিকসহ তিনজনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে বগুড়া শহরের বনানী এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে দুটি বার্মিজ চাকু, দুটি মোটরসাইকেল এবং তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
আটকরা হলেন- বগুড়ার গণ্ডগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২২), গণ্ডগ্রাম উত্তরপাড়া এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান রকি (২৫), গণ্ডগ্রাম নতুনপাড়া এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে তারিকুল ইসলাম (২২), গণ্ডগ্রাম নতুনপাড়া এলাকার জিন্নাহ খানের ছেলে জিসান খান (২১), গণ্ডগ্রাম সারিয়াকান্দি পাড়া এলাকার মৃত মিলন হোসেনের ছেলে জিহাদ (২০) এবং মালতিনগর স্টাফ কোয়ার্টার বটতলা এলাকার আনারুল সরকারের ছেলে টুটুল (২০)।
জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ইনস্পেক্টর রাকিব হোসেন এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহরের জেলখানা মোড় এলাকায় ফ্রেস জুস বারের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন— দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের (টিবিএস) উত্তরাঞ্চল প্রধান খোরশেদ আলম, অনলাইন পোর্টাল বগুড়া লাইভের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আসাফুদৌলা নিয়ন এবং তৌফিকুল ইসলাম নিরব। আহত সাংবাদিক নিয়ন ও খোরশেদকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের মাথা, চোখ ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সাংবাদিক খোরশেদ বলেন, 'ওই দিন বিকেল তিনটার দিকে আমরা ওই জুস বারে যাই। জুস পান করে বের হওয়ার সময় হঠাৎ ১২-১৪ জন যুবক নিয়নকে ঘিরে ধরে। আমি এগিয়ে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা আমাকে মারধর শুরু করে, মাথায় কিল-ঘুষি দেয়। এরপর এক যুবক চাকু বের করলে নিয়ন আমাকে বাঁচাতে গেলে ৮-৯ জন তাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে।'
সাংবাদিক নিয়ন বলেন, 'আমি সবাইকে চিনতে পারিনি। তবে একজন আমার এলাকার ছিল। সম্ভবত তারা আগে থেকেই আমাদের অনুসরণ করছিল। বের হওয়ার সময় কয়েকজন আমার নাম-পরিচয় জানতে চায়। আমি পরিচয় দিলে পিছন থেকে হঠাৎ আক্রমণ করে। মাথা ও চোখে এত ঘুষি মারতে থাকে যে একপর্যায়ে আমি ডান চোখে দেখতে পাইনি। পরে কৌশলে সেখান থেকে সরে এসে হাসপাতালে যাই।'
এই হামলার ঘটনায় পরে নিওন বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এছাড়া, অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ডিবি কর্মকর্তা রাকিব হোসেন জানান, ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হামলাকারীদের শনাক্ত করে একাধিক অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, আটক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের বিরুদ্ধে এর আগে হত্যা ও মাদক আইনে দুটি মামলা এবং হাবিবুর রহমান রকির বিরুদ্ধে অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি, হত্যাচেষ্টা ও মাদকসহ ছয়টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আটকদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।