নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ বাংলাদেশ ব্যাংকের

বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই তহবিল থেকে শুধু স্টার্ট-আপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মজুমদার।
আজ (৭ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চারদিনব্যাপী 'বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫'-এর 'বাংলাদেশ স্টার্ট-আপ কানেক্ট ২০২৫' শীর্ষক সেশনে অংশগ্রহণ করে এসব কথা বলেন গভর্নর আহসান এইচ মজুমদার।
'এমপাওয়ারিং ইনোভেশন কানেক্টিং অপরচ্যুনিটি' শিরোনামে সেশনটি অনুষ্ঠিত হয়। মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনা তুলে ধরেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তানভীর আলী।
তানভীর বলেন, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে উদ্ভাবনী এবং স্টার্ট-আপ উদ্যোগের চাহিদা রয়েছে। তবে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে এই খাতে বিনিয়োগ এখনও কম।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্তা দেন লিংকডইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, এবং আইসিটি খাতের প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনে আইসিটি বিভাগের সচিব এবং স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, 'এটি আমাদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। বাংলাদেশ স্টার্ট-আপ কানেক্ট ২০২৫-এ আপনাদের স্বাগত জানাতে পারা আমার জন্য এক বিশেষ সম্মান। এটি বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের একটি প্রধান উদ্যোগ এবং আমাদের যৌথ থিম উদ্ভাবন শক্তিশালী করা, সুযোগকে সংযুক্ত করা'-এর একটি সাহসী প্রতিফলন।'
তিনি বলেন, 'আমরা এখানে শুধু একটি ইভেন্টে অংশ নিতে জড়ো হইনি, বরং আমাদের স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম এবং জাতীয় উন্নয়ন যাত্রার একটি মাইলফলক অতিক্রম করছি। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে চলেছে। এই ভবিষ্যতটি ম্যাক্রো-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ডিজিটাল দক্ষতা ও তরুণদের অংশগ্রহণ এবং উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা নিয়ে অটল প্রতিশ্রুতির উপর ভিত্তি করে নির্মিত হচ্ছে।'
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, 'এক দশক আগে ১০০টিরও কম স্টার্ট-আপ থেকে আজ ১,২০০টির বেশি স্টার্ট-আপ হওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের অগ্রগতি অসাধারণ।'
তিনি বলেন, 'এই স্টার্টআপগুলো শুধু স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, শিক্ষা এবং লজিস্টিকসের মতো খাতে বাস্তব সমস্যার সমাধান করছে না, তারা বাংলাদেশকে বৈশ্বিক উদ্ভাবন মানচিত্রে স্থান দিচ্ছে। প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে, যার ৭৬ শতাংশ এসেছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থেকে এবং ৩০০টিরও বেশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীর আগ্রহ রয়েছে। আমাদের ইকোসিস্টেম আর শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে না, এটি সমৃদ্ধ হচ্ছে।'
তিনি বলেন, আগামী দুই দিনে এই সামিট ৭০ জনের বেশি বক্তা, ২৫টি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান এবং শত শত পরিবর্তনকারীকে একত্রিত করবে, যারা বাংলাদেশের উদ্ভাবন যাত্রার পরবর্তী অধ্যায় তৈরি করবে। নীতি আলোচনার মাধ্যমে, খাত ভিত্তিক সেশনের মাধ্যমে, এবং 'ইউথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৫'-এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি জেলা, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিটি জীবনযাত্রার তরুণ উদ্ভাবকদের একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করছি। এটি শুধু স্টার্ট-আপ প্রদর্শন করার জন্য নয়—এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনের ভবিষ্যৎ গঠন করার ব্যাপার।'