বগুড়ায় যাত্রীর ফেলে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণ ও টাকা ফিরিয়ে দিলেন অটোরিকশাচালক

বগুড়ায় এক তরুণ সিএনজি অটোরিকশাচালক সততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যাত্রীর ফেলে যাওয়া ১৮ ভরি সোনার গয়না ও নগদ ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে তা মালিকের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাতে বগুড়া সদর থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে মালিকের কাছে এসব জিনিস হস্তান্তর করেন অটোরিকশাচালক খায়রুল ইসলাম খোকন (২৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস জানান, খোকনের সততার স্বীকৃতিস্বরূপ তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে এবং শিগগিরই তাকে পুলিশ সুপার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেবেন।
খোকন বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে নিজের ও পরিবারের খরচ চালান।
পুলিশ জানায়, যাত্রীর ফেলে যাওয়া ব্যাগে ১৮ ভরি সোনার গয়না ও নগদ টাকা ছিল। কালো রঙের ওই ব্যাগটির মালিক পাবনার ফরিদপুর উপজেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহিন। তিনি ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা করতে গত ২৯ মার্চ বগুড়ায় যান। শহরের নিউ মার্কেট থেকে স্বর্ণ কিনে বগুড়ার সাতমাথা থেকে খোকনের অটোরিকশায় করে বনানী বাসস্ট্যান্ডে যান বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে।
তবে তাড়াহুড়োয় বাসে ওঠার সময় শাহিন তার তিনটি ব্যাগের একটি অটোরিকশায় ফেলে যান। ওই ব্যাগেই ছিল স্বর্ণ।
ব্যাগটির খোঁজে শাহিন বনানী বাসস্ট্যান্ডে আবার ফিরে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও অটোরিকশাটি পাননি। পরে তিনি শাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এসআই আব্দুল কুদ্দুস মামলার দায়িত্ব নিয়ে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চালক ও অটোরিকশাটির খোঁজে মাঠে নামেন। এরই মধ্যে যাত্রীর চলে যাওয়ার পর রিকশায় ব্যাগটি খুঁজে পান চালক খোকন।
ব্যাগে মূল্যবান কিছু রয়েছে বুঝতে পেরে তিনি যাত্রীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। তবে কেউ যেন মিথ্যা দাবি না করে, এ আশঙ্কায় তিনি পরিচিত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে ব্যাগটি পুলিশের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।
পরে পুলিশ শুক্রবার রাতে খোকন ও যাত্রী শাহিনকে থানায় ডেকে এনে ব্যাগটি হস্তান্তর করে।
ঘটনার প্রসঙ্গে খোকন বলেন, "ব্যাগে কত টাকা বা সোনা ছিল, সেটা মুখ্য বিষয় না। প্রকৃত মালিককে জিনিসপত্র ফেরত দিতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।"