হবিগঞ্জে টর্চ জ্বালিয়ে ১২ গ্রামের সংঘর্ষ: ৩ দিনেও মামলা হয়নি, আটকও হয়নি

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে মোটরসাইকেলের ব্যাটারি কেনা নিয়ে সংঘর্ষের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটকও করেনি পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার মিরপুর বাজারে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বাহুবলের ১২টি গ্রামের বাসিন্দারা। সংঘর্ষ চলে টানা তিন ঘণ্টা। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬০ জন আহত হন।
শনিবার (৫ এপ্রিল) বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'মারামারির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি। স্থানীয়রা আপোসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছেন।'
পুলিশ সদস্যরাও আহত হয়েছেন, তবু কেন মামলা হয়নি—জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে মামলা করা হয়নি।'
তবে পুলিশের একটি সূত্র টিবিএসকে জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর কয়েকজনকে আটক করলেও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাপের মুখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে সংঘর্ষে গুরুতর আহত ২৫ জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী শনিবার জানান, তাঁদের মধ্যে ১০–১২ জন এখনো চিকিৎসাধীন। তবে তাঁদের কেউ আশঙ্কাজনক নন।
সংঘর্ষের প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার বানিয়াগাঁও গ্রামের এক তরুণ ব্যবসায়ী আকাশের সঙ্গে একই উপজেলার চারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা রাসেলের মোটরসাইকেলের ব্যাটারি কেনা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা ঝগড়ায় রূপ নেয়। খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে বানিয়াগাঁওয়ের পক্ষ নিয়ে আশপাশের আটটি গ্রাম ও চারগাঁওয়ের পক্ষে আরও চারটি গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে যোগ দেন। সংঘর্ষস্থল অন্ধকার থাকায় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে একে অন্যের ওপর হামলা চালান দুই পক্ষের লোকজন। এ সময় মিরপুর বাজারে বেশ কয়েকটি দোকানও ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে প্রথমে বাহুবল মডেল থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ তৎপরতায় রাত নয়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।