চালু হল চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ সামুদ্রিক ফেরি সার্ভিস

চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে প্রথমবারের মতো সামুদ্রিক ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে। প্রত্যন্ত দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের চার লাখ বাসিন্দার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় নবনির্মিত ফেরি টার্মিনাল ও বিআরটিসি বাস স্টেশন উদ্বোধন করেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ফেরি সার্ভিসটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া এবং সন্দ্বীপের গুপ্তাছড়ার মধ্যে চলাচল করবে।
সোমবার সকাল ৯টায় সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে প্রথম ফেরি যাত্রা শুরু করে। এ উপলক্ষ্যে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত ভার্চুয়াল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন― পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফরিদা আখতার।
ফেরি সার্ভিসের সাথে একত্রে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) চট্টগ্রাম বিমানবন্দর, সি বিচ, নিমতলা, নয়াবাজার, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া ফেরি ঘাট এবং সন্দ্বীপ এনাম নাহার মোড়ের সাথে সংযোগকারী একটি এসি বাস সার্ভিস চালু করেছে।
ফেরি সার্ভিসের জন্য উভয় প্রান্তে নতুন রাস্তা, পার্কিং সুবিধা এবং ফেরি পিয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। একটি ফেরি রুট চালুর আগে বেশ কয়েকটি ট্রায়াল রান পরিচালিত হয়েছিল।
এই উন্নয়নের ফলে, বাস, ট্রাক, ট্যাংক লরি, মিনিবাস এবং প্রাইভেট কার সহ সব ধরনের যানবাহন এখন সরাসরি সন্দ্বীপে যেতে পারবে। এই মাইলফলকটি জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে এবং দ্বীপের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে অংশগ্রহণ বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সন্দ্বীপের বাসিন্দা সালেহ নোমান বলেন, "সন্দ্বীপ এখন জাতীয় যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সাথে একীভূত হয়েছে। এটি দ্বীপ উপজেলায় উন্নয়ন ঘটাবে এবং এর জনগণের জীবনযাত্রার মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।"
বিআইডব্লিউটিএ চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ফেরি সার্ভিসের অপারেশনাল দিকগুলো তুলে ধরে বলেন, "চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপের মধ্যে যাত্রা প্রায় এক ঘণ্টা দশ মিনিট সময় নেয়। জোয়ারভাটা সাপেক্ষে প্রতিদিন চারটি ফেরি ট্রিপ দিবে। প্রতিটি ফেরিতে বিভিন্ন আকারের প্রায় ৩৫টি যানবাহন চলাচল করতে পারে।"
উন্নত মাঝারি ধরনের ফেরি 'কপোতাক্ষ'-এর মাস্টার শামছুল আলম সাইফুল আরও জানান, জাহাজটি গাড়িসহ ৬০০ যাত্রী বহন করতে পারে।
ফেরিটিতে সাধারণ যাত্রীর জন্য ১০০ টাকা, মোটরসাইকেল ২০০ টাকা, সিএনজি অটোরিকশা ৫০০, প্রাইভেট কার ৯০০ টাকা, বাস ৩৩০০ টাকা, ট্রাক ৩৩৫০ টাকা এবং ১০ চাকার লড়ির ৭১০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।