আইজিডব্লিউ খাতে ৮৬৮ কোটি টাকা পাচার: দুই প্রতিষ্ঠানের ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটর খাতে প্রায় ৮৬৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুটি প্রতিষ্ঠান ও তাদের শীর্ষ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার (২৩ মার্চ) সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান অ্যাপল গ্লোবালটেল কমিউনিকেশন্স লিমিটেড ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত মোট ৩০১ কোটি ২২ লাখ ৭৭ হাজার ১১৩ মিনিট আন্তর্জাতিক কল আনয়ন বা সেবা রপ্তানি করেছে। এ সেবার আর্থিক মূল্য ৬ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬৫ মার্কিন ডলার।
কিন্তু বৈদেশিক আয়ের এ বিপুল পরিমাণ অর্থের বিপরীতে মাত্র ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ১৪৩ মার্কিন ডলার দেশে প্রত্যাবাসিত হয়েছে। বাকি ৬ কোটি ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২১ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে দেশে না এনে মানি লন্ডারিং করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিউর রহমান খান এবং চেয়ারম্যান মহি উদ্দিন মজুমদারের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ভিশন টেল লিমিটেড নামের আরেক আইজিডব্লিউ অপারেটর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৭৩ কোটি ২২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৯৫ মিনিট আন্তর্জাতিক কল আনয়ন করে, যার আর্থিক মূল্য ৫ কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৪৬৪ মার্কিন ডলার।
তদন্তে জানা যায়, ওই বৈদেশিক আয়ের পুরো অর্থই পাচার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক ডলারও দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়নি। পাচার হওয়া এ অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় ভিশন টেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাসেল মির্জা ও চেয়ারম্যান এম বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধেও একই ধারায় চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, উভয় প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রাপ্য রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের অর্থও এখন পর্যন্ত জমা দেয়নি।