চট্টগ্রামে নতুন কারখানা চালু করল মার্কিন সুতা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান

বৈশ্বিক সুতা সরবরাহকারী আমেরিকান অ্যান্ড এফার্ড (এঅ্যান্ডই) চট্টগ্রামে তাদের ২৪তম কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে, যা তাদের বৈশ্বিক সম্প্রসারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
সুতা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই অত্যাধুনিক কেন্দ্র এঅ্যান্ডই-এর উৎপাদন নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নতমানের সুতার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সক্ষমতা বাড়াবে।
চট্টগ্রামের ব্যস্ত সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রের কাছে স্থাপিত নতুন কারখানাটি এঅ্যান্ডই-এর গাজীপুরের বিদ্যমান কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করেছে এবং এ অঞ্চলের প্রতি কোম্পানির অঙ্গীকার আরও দৃঢ় করেছে।
ফিতা কাটার মধ্য দিয়ে কারখানাটি উদ্বোধন করা হয়। সেখানে শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে গ্রাহক, সরবরাহকারী, অংশীদার ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর অতিথিদের কারখানার বিভিন্ন অংশ ঘুরিয়ে দেখানো হয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সম্প্রসারণযোগ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার সুবিধা তুলে ধরা হয় তাদের সামনে।
কোম্পানিটি ২০ মার্চ এক ব্লগ পোস্টে জানায়, নতুন এই স্থাপনা উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াবে, সেবার মান উন্নত করবে এবং সরবরাহের সময় কমাবে। ফলে আরও দক্ষতার সঙ্গে উচ্চমানের সুতা পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
এএন্ডই-এর মূল প্রতিষ্ঠান এলিভেট টেক্সটাইলসের সিইও জেফ্রি পি প্রিচেট বলেন, 'এই কারখানাটি আমাদের গ্রাহকদের আরও ভালো সেবা দিতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি এএন্ডই-এর উচ্চমান বজায় রাখবে। এটি আমাদের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নতুন ধরনের সুতা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।'
তিনি বলেন, 'নতুন কারখানায় স্পান ও ফিলামেন্ট সুতা তৈরির উন্নত উৎপাদন লাইন রয়েছে। পরিবেশগত প্রভাব কমাতে এখানে সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি একটি আঞ্চলিক উদ্ভাবনকেন্দ্র হিসেবেও কাজ করবে, যেখানে টেকসই সুতা তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।'
এএন্ডই-এর উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন এই কারখানা ৩৫০টির বেশি স্থানীয় কর্মসংস্থান তৈরি করবে, যা অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এএন্ডই-এর প্রেসিডেন্ট ক্রিস অল্ট বলেন, 'এই কারখানার মাধ্যমে আমরা আরও দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সুতা ও বিশেষায়িত সুতা পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে পারবো।'
এএন্ডই সাউথ এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাঞ্জেলো লিনেজ বলেন, এই কারখানার প্রভাব কেবল উৎপাদন খাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটি সামাজিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, 'নতুন এই সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমরা উচ্চমানের পণ্য ও সেবা দেওয়ার পাশাপাশি অঞ্চলের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতেও অবদান রাখছি।'
কোম্পানিটির মতে, নতুন এই কারখানাটি বৈশ্বিক টেক্সটাইল শিল্পে নেতৃত্ব ধরে রাখার বৃহত্তর কৌশলের অংশ। ১৮৯১ সাল থেকে উৎকর্ষের যে ঐতিহ্য এএন্ডই গড়ে তুলেছে, তার ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে চলেছে। চট্টগ্রামের এই কারখানা টেক্সটাইল খাতের সুতা শিল্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।