‘নদীগুলো হারিয়ে গেলে ভবিষ্যতে কবরের জমিও পাওয়া কঠিন হবে’: উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান

দেশের নদীপথের ক্রমাবনতি ও যাত্রী সংকটে হতাশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফওজুল কবির খান। সম্প্রতি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, দেশের অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ক্ষেত্রে তার পছন্দের তালিকায় নদীপথই প্রথম, এরপর রেলপথ, বিমান ও সর্বশেষ সড়কপথ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন আর ভালো লঞ্চ না থাকায় নদীপথ ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি জানান, আগে পটুয়াখালীগামী ভালো লঞ্চ থাকলেও পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রীর অভাবে তা বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর বরিশাল হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও সেখানে একই চিত্র দেখতে পান। যাত্রী সংকটে লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, এমনকি তিনি যে লঞ্চে ফিরেছেন, সেটির পরের শিডিউল ছিল চার দিন পর।
তিনি লিখেছেন, 'পটুয়াখালী যাওয়ার ভালো লঞ্চ নাই, সড়কপথে যাওয়া উত্তম হবে। আগে ভালো লঞ্চ ছিল, পদ্মা সেতু হওয়ার পর যাত্রীর অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। আমিও নাছোড়বান্দা, বললাম লঞ্চে বরিশাল হয়ে যাব। যদিও এর ফলে সড়কপথে এক থেকে দেড় ঘণ্টা যাতায়ত বাড়বে'।
'সেভাবেই গেলাম ও ফিরে আসলাম। এখানেও পদ্মা সেতুর কারণে যাত্রীসংকট। আমরা যে লঞ্চটিতে ১৫ ই মার্চ ফিরলাম, তার পরের শিডিউল ১৯ তারিখে। এর মধ্যে অন্য লঞ্চ চলবে', যোগ করেন তিনি।
দেশের নদীপথের এই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমাদের সড়ক ও সেতুর বুভুক্ষা কবে শেষ হবে? বর্তমান হারে সেতু ও সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ অব্যাহত থাকলে, আমাদের সড়ক ও সেতুতেই ফসল আবাদ, শিল্প উৎপাদন করতে হবে। এমনকি ভবিষ্যতে কবরের জন্য জমি পাওয়াও দুরূহ হতে পারে।'
একসময় দেশের নদীগুলোই প্রধান যাতায়াত পথ ছিল উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'নদীপথে ঢাকার বর্তমান হোটেল সোনারগাঁও থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত যাওয়া যেত। ভাবা যায়!'
কিন্তু এখন নদীগুলো যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের পরিবর্তে বর্জ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার ভাষায়, 'ঢাকার সদরঘাটে তাই এখন আমাদের নাকে রুমাল চাপা দিয়ে হাঁটতে হয়। এটাই কি আমাদের নিয়তি!'