ধানমন্ডিতে ফুড কার্ট চালানো সেই শিক্ষার্থী ছাড়া পেলেও বন্ধু এখনও পুলিশের হেফাজতে

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে আটক ধানমন্ডিতে ফুড কার্ট চালানো তরুণ মহিউদ্দিনকে গতকাল (১২ মার্চ) রাতেই ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
মুচলেকায় দেওয়ার মাধ্যমে তিনি ছাড়া পেয়েছেন বলে এক ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
তবে মহিউদ্দিন ছাড়া পেলেও তাকে সাহায্য করতে আসা তার বন্ধু সাফিয়ান শরীফ আলফাজ এখনও পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, "গত রাতে একজনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সকালে যিনি জামিন পেয়েছিলেন, তিনি এসে তার বন্ধুকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর দুজনকেই পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি অফিসে পাঠানো হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "ডিসি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেট আটক থাকা ব্যক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।"
এর আগে, গতকাল বুধবার ধানমণ্ডিতে ফুটপাতে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় মহিউদ্দিনের একটি ফুড কার্ট উচ্ছেদ করা হলে তিনি প্রতিবাদ করেন।
তার দাবি, পরিবারকে সহযোগিতা করতে তিনি এই দোকান পরিচালনা করছেন। কাউকে অসুবিধা না করে এমন সৎকাজও কেন তিনি করতে পারবেন না?
উপস্থিত গণমাধ্যমের সামনে এমন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়েই পুলিশ তাকে আটক করে টেনেহিঁচড়ে ভ্যানে ওঠায়।
এ ঘটনার ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, "আমি কলেজ গ্র্যাজুয়েট হয়েও জীবিকা নির্বাহের জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আপনি কি আমাকে চাকরি দিতে পারবেন? তাহলে কেন আমার একমাত্র আয় রোজগারের মাধ্যম ধ্বংস করলেন?"
এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে মহিউদ্দিনকে ছাড়িয়ে আনতে গতরাতেই ধানমণ্ডি থানায় যান তার স্বজনরা।
কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আটক হওয়ায় মহিউদ্দিনকে পুলিশ মুক্তি দিতে অপারগতা জানায়। পরে বিষয়টি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নজরে আসলে তারা মহিউদ্দিনের মুক্তির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে রাতেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মুচলেকা গ্রহণের মাধ্যমে মহিউদ্দিনকে তার বাবা-মায়ের জিম্মায় ছেড়ে দেন।