স্মার্টফোন এখন দরকারি; উচ্চ কর যদিও অনেকের ধরাছোঁয়ার বাইরে ঠেলে দিচ্ছে
বিদেশ থেকে কেউ দেশের ফেরার সময় আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বা পরিচিতজনদের সবচেয়ে সাধারণ অনুরোধগুলোর একটি হলো—"ভাই, আমার জন্য একটা ফোন নিয়ে আসিস।" যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, মালয়েশিয়া বা ভারত—যেখান থেকেই আসা হোক, অনেক যাত্রীই স্বেচ্ছায় লাগেজে একটি আইফোন বা নতুন স্যামসাং মডেল গুঁজে আনেন। কারণ সবারই জানা: দামের ব্যবধানটা। বাংলাদেশে একই ফোনের দাম এসব বড় অর্থনীতির বাজারগুলোর তুলনায় প্রায় ৮০ শতাংশ বা তারও বেশি।
স্মার্টফোনের দামে অবিশ্বাস্য বৈষম্য
সব বড় ব্র্যান্ডেই দামের এই পার্থক্য চোখে পড়ে।
অ্যাপলের আইফোন-১৭ এর কথাই ধরুন, যুক্তরাষ্ট্রে এর দাম ৭৯৯ ডলার— বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯৭ হাজার টাকা। দুবাইয়ে তা প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু ঢাকায় অনুমোদিত দোকানে গেলে একই ফোনের দাম দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর এসব তথ্য জানা গেছে, অ্যাপলের ইউএস ও দুবাইয়ের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশের স্থানীয় খুচরা রিটেইলারদের মূল্যতালিকা অনুযায়ী।
শুধু অ্যাপল নয়—স্যামসাং, ভিভো, শাওমি বা অন্য যেকোনো গ্লোবাল ব্র্যান্ডও বাংলাদেশে চড়া দামে বিক্রি হয়— চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, ভারত বা অন্য প্রায় সব দেশের তুলনায় যা অনেক বেশি।
এতে এক অদ্ভুত বৈপরীত্য তৈরি হয়েছে: যে দেশে মাথাপিছু আয় সমকক্ষ অনেক দেশের চেয়ে কম, সে দেশেই স্মার্টফোনের সরকারি খুচরা দাম সবচেয়ে বেশি—এমনকি যেগুলো স্থানীয়ভাবে সংযোজন বা 'মেড ইন বাংলাদেশ' হিসেবে বাজারজাত করা হয় সেগুলোরও।
উদাহরণ হিসেবে ভিভোর কথাই বলা যাক। তাদের একটি ফ্ল্যাগশিপ মডেল, যেটি বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে তৈরি হিসাবে বাজারজাত করা হয়েছে, চীনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ এবং ভারতের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়। স্থানীয়ভাবে সংযোজন হয় না এমন ব্র্যান্ডগুলোর দাম আরও বেশি। এমনকী যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান বা আরব আমিরাতে–এর আনুষ্ঠানিক দামকেও তা বেশিরভাগ সময়েই ছাড়িয়ে যায়।
মূল সমস্যার গোড়া হলো চড়া করের বোঝা
সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, স্মার্টফোন আমদানিতে বাংলাদেশের সম্মিলিত ৬১ শতাংশ শুল্কহারের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে দেশের আরও স্মার্টফোন উৎপাদনকে উৎসাহ দেওয়া। কিন্তু, নীতি বিশ্লেষক ও শিল্পসংশ্লিষ্ট এখন বলছেন, এই কৌশল হিতে-বিপরীত হয়েছে। এতে প্রতিযোগিতামূলক শিল্প গড়ে ওঠার বদলে এই শুল্ক কাঠামো দাম বাড়িয়েছে, গ্রে মার্কেটকে বিস্তৃত করেছে, ফলে বৈধ পরিবেশকরা এক বৈরী পরিবেশে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে।
আর স্মার্টফোন যখন শিক্ষা থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেন—সবকিছুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে, তখন এটি আর শুধু মধ্যবিত্তের অভিযোগ নয়; বরং একটি জননীতিগত সমস্যায় পরিণত হয়েছে। কেন বাংলাদেশে ফোন এত দামী? এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—এর দাম কি কখনো কমবে?
আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশের শুল্ক বৈষম্য অত্যন্ত তীব্র।
সংশ্লিষ্ট শিল্পের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে প্রতি মাসে ৩২ –৩৫ লাখ স্মার্টফোন বিক্রি হয়। বছরের মোট বিক্রির ৮০–৮৫ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ কোটি থেকে ৩ কোটি ২০ লাখ হ্যান্ডসেট হলো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস—যেখানে শাওমি, স্যামসাং, ভিভো, অপো, রিয়েলমি, ইনফিনিক্স এবং টেকনো বাজারের বেশিরভাগ দখল করে আছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব টিবিএস–কে বলেন, সরকার এখন বিএটিআরসি ও এনবিআরের সঙ্গে কাজ করছে বৈধভাবে আমদানি করা স্মার্টফোনের শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর জন্য। এতে বাজারে দাম স্থিতিশীল হবে এবং আঞ্চলিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য আসবে।
তবে আমদানিকারকরা বলেন, উচ্চ শুল্কই একমাত্র সমস্যা নয়। কমপ্লায়েন্স ব্যয়, অস্থির সরবরাহ শৃঙ্খল এবং মাসের পর মাস এলসি–সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে তাদের ব্যবসায় পরিচালন খরচ বাড়ছে।
শীর্ষ এক পরিবেশক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী (সিইও) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "অন্যান্য বাজারে সাপ্লাই চেইন আগে থেকে অনুমান করা যায়। বাংলাদেশে অনিশ্চয়তা নিজেই এক ধরনের খরচ—এবং প্রতিটি বিঘ্নের খরচ শেষপর্যন্ত ভোক্তার ঘাড়ে এসে চাপে।"
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, উচ্চ করই এদেশে হ্যান্ডসেটের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। পাশাপাশি অবৈধ ফোনের বিস্তার স্থানীয়ভাবে উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করতে দিচ্ছে না। "স্মার্টফোনের কাঁচামালের দামও বাড়ছে, যা তাদের দাম নির্ধারণে আরও চাপ তৈরি করছে," তিনি বলেন।
স্থানীয় বনাম বৈশ্বিক দামের বিরাট পার্থক্য
ভিভো এক্স-২০০ বাংলাদেশি ভোক্তাদের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জকে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দেখায়। চীনে এর দাম ৪ হাজার ২৯৯ রেনমিনবি (৭৩,৮০০ টাকা) এবং ভারতে ৬৫ হাজার ৯৯৯ রুপি (৯০,৫০০ টাকা) দামের ফোনটি বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক বা বৈধ চ্যানেলে বিক্রি হয় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯৯ টাকায়। অর্থাৎ, চীন বা ভারতের থেকে গড় আয় তুলনামূলক কম হওয়ার পরেও মূল্যটা এখানকার ভোক্তাদেরই বেশি দিতে হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে ভিভো বাংলাদেশ এর কারণ ব্যাখ্যা করে জানায়, ব্যবসায়িক বিধিনিষেধ, উৎপাদন খরচ, পরিবেশনীতি, তথ্য সুরক্ষা আইন এবং লজিস্টিকস খরচের কারণে বাজারভেদে দাম পরিবর্তিত হয়। তবে এসব বিবেচনায় নেওয়ার পরেও স্পষ্ট পার্থক্য রয়ে যায়।
অননুমোদিতভাবে বা অবৈধভাবে আমদানি হওয়া একই মডেলের ফোন ৩০–৫০ শতাংশ কম দামে পাওয়া যায়—যা প্রমাণ করে উচ্চ শুল্ক এবং বৈধ চ্যানেলের খরচ দামকে কতটা বাড়িয়ে দেয়। একই চিত্র দেখা যায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত অপো, শাওমি ও অনার–এর ক্ষেত্রেও।
এ ধারা শুধু স্থানীয়ভাবে তৈরি ফোনের ক্ষেত্রেই নয়; অ্যাপল ও স্যামসাং–এর ফ্ল্যাগশিপ মডেলগুলোতে এ পার্থক্য আরও ভয়াবহ। আইফোন-১৭ যুক্তরাষ্ট্রে ৭৯৯ ডলার (৯৭,০০০ টাকা), চীনে ১,০৩,০০০ টাকা, জাপানে ১,০২,০০০ টাকা আরব আমিরাতে ১,১৩,০০০ টাকা, যুক্তরাজ্যে ১,৩০,০০০ টাকা এবং ভারতে ১,১৩,০০০ টাকা সমমূল্যের—কিন্তু বাংলাদেশে দাম ১,৮০,০০০ টাকা।
স্যামসাং এস-২৫ আল্ট্রা যুক্তরাষ্ট্রে ১,৫৫,০০০ টাকা, আমিরাতে ১,০৮,০০০, মালয়েশিয়ায় ১,৫০,০০০, ভারতে ১,৭৫,০০০ টাকা সমমূল্যের—আর বাংলাদেশে যা ২,২৬,০০০ টাকা দাম।
স্যামসাং–এর এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রে মার্কেট কার্যত কোনো কর দেয় না, অথচ বৈধ আমদানিকারকদের প্রায় ৬০ শতাংশ সম্মিলিত শুল্ক দিতে হয়। "দামের এই বৈষম্যের ফলে বৈধ ভোক্তারাই শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি আরও বলেন, একারণে অসম প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয় দেশের স্মার্টফোন মার্কেটে। আর সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে চলে যায় পছন্দের ফোনের দাম।
গ্যাজেট অ্যান্ড গিয়ারের আশিক আহমেদ বলেন, "৬১ শতাংশ সম্মিলিত কর সরাসরি আইফোনের দাম বাড়ায়। কর কমালে দাম সঙ্গে সঙ্গে কমে আসবে।" তার মতে, নীতিগত সংস্কার স্মার্টফোনকে সহজলভ্য করবে এবং আনঅফিশিয়াল বা অবৈধ আমদানির ওপর নির্ভরতাও কমাবে।
সেল ফোন ইউজার্স কমিউনিটি অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম মঈনুদ্দিন বলেন, "বিভিন্ন অঞ্চলের ফ্ল্যাগশিপ মডেল তুলনা করলেই বোঝা যায়—বাংলাদেশের উচ্চ কর ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো কিভাবে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করছে।"
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘনঘন প্রযুক্তি পরিবর্তন ও বাংলাদেশের তুলনামূলক ছোট বাজারের কারণে অনেক হাই–এন্ড মডেল এখানেই তৈরি করা সম্ভব নয়। "যেসব প্রিমিয়াম ডিভাইস আমরা অ্যাসেম্বল করি, সেগুলোর বিক্রিও কম—ফলে প্রতিযোগিতামূলক দাম রাখা যায় না," তিনি বলেন।
তার মতে, স্থানীয় উৎপাদনেও ৩৫–৪০ শতাংশ কর থাকে, যার ফলে মুনাফার মার্জিন কম রাখার পরও ভোক্তা–স্তরে দাম বেড়ে যায়। যদি কর যুক্তিযুক্ত করা হয় এবং অবৈধ ফোন নির্মূল হয়, তাহলে স্থানীয় বাজারেই দাম কমে আসবে।
কেন দামের এই বিশাল পার্থক্য
বাংলাদেশে স্মার্টফোনের দাম চড়া হওয়ার প্রধান কারণ হলো এশিয়ার অন্যতম সর্বোচ্চ আমদানি কর। বৈধভাবে আমদানি করা ফোনে ৫৭–৫৯ শতাংশ সম্মিলিত কর দিতে হয়—যার মধ্যে রয়েছে ভ্যাট, কাস্টমস ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি এবং অগ্রিম কর। স্থানীয়ভাবে অ্যাসেম্বল করা ফোনেও ১৮–২২ শতাংশ কর দিতে হয়, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে খুচরা মূল্য বাড়িয়ে দেয়।
বিপরীতে, বৈশ্বিক বাজারগুলোর শুল্ক অনেক কম। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র স্মার্টফোন আমদানিতে শূন্য কর নেয়—ফলে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যভেদে মার্কিন ক্রেতাদের শুধুমাত্র ৪–৯ শতাংশ সেলস ট্যাক্স দিতে হয়। যুক্তরাজ্যও শুল্ক নেয় না, তবে ২০ শতাংশ ভ্যাট নেয়।
এই অঞ্চলের দেশগুলোতেও শুল্ক আরও কম: চীনে ১০–১৫ শতাংশ, ভারতে ১৮–২০ শতাংশ (মূলত জিএসটি), মালয়েশিয়ায় ০–১০ শতাংশ, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাত্র ৫ শতাংশ ভ্যাট। বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈষম্যই বাংলাদেশের খুচরা পর্যায়ে ফোনের দাম সরাসরি বাড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, "যেখানে যুক্তরাষ্ট্র–যুক্তরাজ্য স্মার্টফোন আমদানিতে প্রায় শূন্য কর রাখছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রায় ৬০ শতাংশ শুল্ক ফোনকে অযথাই ব্যয়সাপেক্ষ করছে। স্মার্টফোন এখন আর কোনো বিলাসপণ্য নয়—ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য এর কর কমানো জরুরি।"
গ্রে মার্কেট: সস্তা ফোন, বড় সমস্যা
ঢাকায় স্মার্টফোনের বড় বাজারগুলো—বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, মোতালেব প্লাজা, স্টেডিয়াম মার্কেট, মতিঝিল ও জেলা শহরের দোকান—আনঅফিসিয়াল ফোনে ভরা। এগুলো দুবাই, মালয়েশিয়া, হংকং ও সিঙ্গাপুর থেকে অবৈধভাবে আসে—কোনো শুল্ক ছাড়াই। এসব দোকানে ফোন ৪০–৫০ শতাংশ কম দামে বিক্রি হয়।
যমুনা ফিউচার পার্কের এক বিক্রেতা বলেন, "গ্রাহকরাই জানে অফিসিয়াল ফোন দামী। একই ফোন সস্তায় পেলে কেউ বেশি দেবে কেন?"
বড় এই গ্রে মার্কেটের কারণে বৈধ ফোনের বিক্রি কমে, ফলে অর্থনীতির স্কেল কমে গিয়ে বৈধ ফোন আরও দামী হয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সরকারের নীতিকাঠামো এই বিকৃতি সৃষ্টি করেছে। গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, এত বেশি কর দিয়ে বৈধভাবে ফোন আমদানি ও বিক্রি করা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব। বৈধ আমদানির প্রক্রিয়াও জটিল ও সময়সাপেক্ষ।
তিনি বলেন, "যদি সরকার আমদানি কর ১৫–২০ শতাংশে নামিয়ে আনে, এবং স্থানীয় উৎপাদন করমুক্ত করে, বাজার সঙ্গে সঙ্গে স্থিতিশীল হবে।"
স্থানীয় উৎপাদকদেরও প্রতিযোগী হওয়ার মতো অবস্থা নেই
বাংলাদেশে প্রায় ১৮টি স্মার্টফোন অ্যাসেম্বলি ও ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট আছে। ওয়ালটন, সিম্ফনি, এডিসনসহ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে স্থানীয় চাহিদার ৭০–৭৫ শতাংশ সরবরাহ করে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু, বাস্তবে অধিকাংশ কারখানাই সক্ষমতার অনেক নিচে চলছে।
অনার স্মার্টফোন সংযোজন শুরু করা স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহিরুল ইসলাম বলেন, "আমরা শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু কারো হ্যান্ডব্যাগে করে বিদেশ থেকে ফোন এনে যে দামে দেশে বিক্রি হয়, তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা অসম্ভব। অবৈধ আমদানি বন্ধ না হলে স্থানীয় শিল্প বাঁচবে না।"
তিনি স্থানীয় উৎপাদনকে টিকিয়ে রাখতে তিনি শূন্য কর দাবি করেন।
মোবাইল কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশনের মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বৈধ ফোন আনঅফিসিয়াল ফোনের তুলনায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। "কর কাঠামো ঠিক না করলে দাম কমবে না," তিনি বলেন। আঞ্চলিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে ৫৭–৫৯ শতাংশ কর কমিয়ে ২৫–৩০ শতাংশ নামানোর প্রস্তাব দেন তিনি।
মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সভাপতি মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, ৫৭ শতাংশ কর নিয়ে অফিসিয়াল ফোনের বাজার বাড়তে পারে না। কার্যকর হওয়ার পর দাম আরও বাড়বে, শুল্ক যৌক্তিক না করা হলে।
ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার বা এনইআইআর—একটি সরকারি ব্যবস্থা, যা আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের টেলিকম নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেট যাচাই করবে।
