৯ মাসে বিএটি বাংলাদেশ থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ২৭,১৯৬ কোটি টাকা, বেড়েছে ১৪ শতাংশ
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড থেকে ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাবদ সরকার ২৭ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি, কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবৃতি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়লেও—বিএটি বাংলাদেশের নিজস্ব আর্থিক পারফরম্যান্স এই সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়েছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়কালে কোম্পানির নিট রাজস্ব ১৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৫৪.৭১ কোটি টাকায়, এবং নিট মুনাফা ৪৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭২০ কোটি টাকায়। কোম্পানির প্রতি শেয়ার আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩.৩৪ টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৪.৪৯ টাকা।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, মুনাফা কমার প্রধান কারণ হলো সিগারেট বিক্রির পরিমাণে বড় ধরনের পতন, উচ্চ আবগারি শুল্ক, এবং মহাখালীর কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অতিরিক্ত ব্যয়। ৯ মাসে সিগারেট বিক্রির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ কমে ৩৬,২৩৯ মিলিয়ন শলাকায় নেমে এসেছে।
সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানির প্রতি শেয়ারে নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১০৫.২২ টাকা, আর প্রতি শেয়ারে নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ ছিল ঋণাত্মক ২১.৭০ টাকা। কোম্পানি জানিয়েছে, বিক্রয় আদায় কমে যাওয়া এবং আবগারি শুল্ক প্রদানের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে নগদ প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে।
চলতি বছরের জুনের শুরুতে বিএটি বাংলাদেশ ঘোষণা করে যে, তারা ১ জুলাই থেকে মহাখালী কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করবে; কারণ সুপ্রিম কোর্ট কোম্পানির জমির লিজ নবায়নের আপিল খারিজ করে দিয়েছে। একইদিনে প্রতিষ্ঠানটি তাদের করপোরেট সদর দপ্তর মহাখালী ডিওএইচএস থেকে সাভারের আশুলিয়ায় স্থানান্তর করে।
বিএটি বাংলাদেশ ১৯৬৪ সাল থেকে মহাখালী কারখানার স্থানে ৩০ বছরের নবায়নযোগ্য লিজের আওতায় পরিচালিত হচ্ছিল, যা সর্বোচ্চ ৯০ বছর পর্যন্ত নবায়নযোগ্য ছিল। ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মহাখালী কারখানাটি ছিল কোম্পানির দ্বিতীয় উৎপাদন কেন্দ্র; এর আগে ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে প্রথম কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল, যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঢাকার কারখানা বন্ধের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বিএটি বাংলাদেশ সাভার কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে প্রায় ২৯৭ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এই সম্প্রসারণ প্রকল্পের অর্থায়ন করা হবে নিজস্ব তহবিল ও ব্যাংক ঋণের সমন্বয়ে, এবং চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণ করা হবে কোম্পানির নগদ প্রবাহ পর্যালোচনা শেষে।
