পিপিপি তহবিলে ৫,০৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

দেশের সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ জোরদারে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কাঠামোর অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
এই উদ্দেশ্যে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে পিপিপি তহবিল হিসেবে ৫,০৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ বরাদ্দ দেশের অবকাঠামো, পরিবহন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আজ সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়েছে, "দেশের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রসমূহে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়ন উৎসাহিত করার দিকেও আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি।"
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বরাদ্দ পিপিপি প্রকল্পগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন, বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে সহায়ক হবে।
এদিকে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং প্রতিশ্রুত বিনিয়োগগুলো বাস্তবায়নে—রূপান্তর করার লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীদের একটি 'ইনভেস্টমেন্ট পাইপলাইন' তৈরি করছে সরকার।
বাজেট প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিগুলোকে ট্র্যাক করে সেগুলোকে বাস্তব বিনিয়োগে রূপান্তর করা হবে। এটি বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকার মনে করছে, এই উদ্যোগের ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগ বাস্তবায়নের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগের অঙ্গীকার থেকে বাস্তবায়নের ব্যবধান কমাতে হলে এ ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর ও কাঠামোগত উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই বরাদ্দকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)- এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর— তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় টিবিএস'কে তিনি বলেন, "এতোদিন পিপিপি প্রকল্পে খুব একটা সাফল্য দেখা যায়নি। তবে এবার লক্ষ্যভিত্তিক অগ্রসর হলে উন্নয়ন সম্ভব। এই বরাদ্দ প্রকল্প বাস্তবায়নে কার্যকর হবে।"
তিনি বলেন, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, বিডা, বেজা, বেপজা-সহ বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আমরা একটি ছাতার নিচে আনার চেষ্টা করছি। যখন পিপিপি কর্তৃপক্ষও একই ছাতার নিচে চলে আসবে আমার ধারণা এর কর্মপধি বৃদ্ধি পাবে এবং কাজের গতি বাড়বে।
আশিক চৌধুরী আরও বলেন, "এবার অর্থ মন্ত্রণালয় বড় আকারের বাজেট না দিয়ে লক্ষ্যভিত্তিক বাজেট দিয়েছে, এটা প্রশংসনীয়। আমরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছি। বিশেষ করে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে বিনিয়োগের ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সাপোর্ট পেয়েছি এবং পেয়ে যাচ্ছি। সেটারই ধারাবাহিকতায় বাজেটে—সেগুলো উঠে এসেছে। বিডার কাজের সঙ্গে এগুলো খুব এলাইন (সামঞ্জস্যপূর্ণ)।"