বাজেট ২০২৫-২৬: ভর্তুকি ও প্রণোদনায় বরাদ্দ ৮৯ হাজার ১৬২ কোটি টাকা

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনাখাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৯ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা কম।
আজ সোমবার (২ জুন) জাতীয় বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা এ ঘোষণা দেন।
তবে এটি এবছরের মূল বাজেটের তুলনায় সামান্য বেশি। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনাখাতে বরাদ্দ ছিল ৮৮ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ ও এলএনজি আমদানির বকেয়া বিল পরিশোধ করতে গিয়ে সংশোধিত বাজেটে এখাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ১১৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, নতুন অর্থবছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর মাধ্যমে প্রায় ১১ হাজচার কোটি টাকা ভর্তুকি কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তারপরও আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে ৩৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা খাতভিত্তিক ভর্তুকি হিসেবে সর্বোচ্চ।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। এবছরের মূল বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা ছিল।
তবে খাত দুটির বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধ করতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দের অর্থ কেটে এনে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা সম্পর্কে মিড টার্ম ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি স্টেটম্যান (এমটিএমপিএস) এ অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ভর্তুকি অব্যাহত রাখা ও আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার মধ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে সরকার। রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার নিচে থাকায় ভর্তুকি ও প্রণোদনা বৃদ্ধির সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে।
তবু জ্বালানি খাতের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এ খাতটি সরকারের অন্যতম প্রধান ভর্তুকিপ্রাপ্ত খাত।
অন্যদিকে, কৃষি খাতে প্রস্তাবিত ভর্তুকির পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সার ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যাতে খাদ্য নিরাপত্তা আরও দৃঢ় করা যায়।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য সহায়তা বাবদ ভর্তুকি বাড়িয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এখাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা।
এর বাইরে নগদ ঋণখাতে নতুন অর্থবছরের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা সাধারণত ভর্তুকি হিসেবে দেখানো হয়।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এখাতে বরাদ্দের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া, আগামী অর্থবছরের বাজেটেও রেমিটেন্সে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং রপ্তানি প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে।
কোনখাতে কি হারে প্রণোদনা দেওয়া হবে, তা সাধারণত বাজেট পাসের পর বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার আকারে ঘোষণা করে।