চট্টগ্রাম কাস্টমসে পুরোদমে শুরু হয়েছে শুল্কায়ন কার্যক্রম, স্বাভাবিক হচ্ছে বন্দর

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আবারও পুরোদমে শুরু হয়েছে শুল্কায়নসহ অন্যান্য কার্যক্রম। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর আজ সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকে কাস্টমস কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়।
শুল্কায়ন, এসেসমেন্টসহ আমদানি-রপ্তানি পণ্য চালানের যাবতীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এর ফলে বন্দরে পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
এর আগে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে বন্দরের কনটেইনার ডেলিভারি ব্যাপকভাবে কমে যায়, ফলে তৈরি হয় কনটেইনার জট। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন, কাস্টমস কার্যক্রম চালু হওয়ায় এক-দুই দিনের মধ্যেই ডেলিভারি বাড়বে এবং কনটেইনার জটও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও ডেপুটি কমিশনার সাইদুল ইসলাম টিবিএসকে জানান, সোমবার সকাল থেকেই আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন শুরু হয়েছে। যদিও শনিবার ও রোববার ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ছিল, এরপরও কর্মকর্তারা কিছু পরিমাণ কাজ করেছেন। তবুও যে ব্যাকলগ তৈরি হয়েছে, তা দুই-এক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার আমদানি পণ্য চালানের বিল অব এন্ট্রি এবং ৫ হাজার রপ্তানি চালানের বিল অব এক্সপোর্ট কাস্টমসে দাখিল হয়। এর মধ্যে এক হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার আমদানি চালানের এসেসমেন্ট চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসেই সম্পন্ন হয়।
সিএন্ডএফ এজেন্ট মালিক ও কর্মীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার ও রবিবার শুল্কায়নের পরিমাণ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছিল।
চট্টগ্রাম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া টিবিএসকে বলেন, "সোমবার সকাল থেকে কাস্টমস কর্মকর্তা কার্যক্রম শুরু করেছেন। আমদানি-রপ্তানি চালানের ডকুমেন্ট সাবমিশন ও এসেসমেন্ট শুরু হয়েছে। গত দুই দিনের কর্মবিরতির ফলে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে আমরা কর্মকর্তাদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাই।"
এর আগে ১৩ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত (শুক্রবার বাদে) ছয় দিন কলম বিরতি পালন করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২৪ ও ২৫ মে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিও পালন করেন তারা।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পৃথক করার অধ্যাদেশ সংশোধনের ঘোষণা আসায়, ২৫ মে সন্ধ্যায় 'এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ' অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে।
কর্মবিরতির কারণে বন্দরে তৈরি হয় কনটেইনার জট। ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউ ধারণক্ষমতার ইয়ার্ডে কনটেইনার জমে যায় ৪২ হাজার ৩১৫ টিইইউ পর্যন্ত। তবে কাস্টমস কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, ডেলিভারি বাড়বে এবং দ্রুত কনটেইনার জটও কমে আসবে।