এলএনজি আমদানির জন্য পর্যাপ্ত ডলার আছে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য দেশে পর্যাপ্ত মার্কিন ডলার মজুত আছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এর ফলে শিল্প খাত ও ইউটিলিটি সরবরাহকারীদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
গতকাল (৩ এপ্রিল) ঢাকার গুলশানে এক সংলাপে গভর্নর বলেন, 'কেউ বলতে পারবে না গ্যাস আমদানির জন্য ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।'
দেশের রিজার্ভ এখন আর জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নয়, এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, 'এখন ডলার পাওয়া যাচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী এলএনজি আমদানিও চলছে।'
'রাইট ইনভেস্টমেন্ট অপশন ইন দ্য কারেন্ট ইকোনমিক কন্ডিশন' শীর্ষক এই সংলাপ বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড আয়োজিত সামার সেল কার্নিভালের অংশ ছিল। বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনামও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে বিপুল ভর্তুকি দেওয়ায় গ্যাস সরবরাহ এখন আর বড় সরবরাহ নয়। 'এ বছর বিদ্যুৎ খাতের জন্য প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার, যেটা বাজেটে ছিল ৩৬ হাজার কোটি টাকা। প্রয়োজন হলে আরও বরাদ্দ দিতে পারে সরকার।'
অতীতের পেমেন্ট বিলম্বের কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, 'ভালো কোম্পানিগুলো চলে গিয়েছিল, কারণ তাদেরকে সময়মতো পেমেন্ট করতে পারছিলাম না। এখন তারা মার্কেটে ফিরে আসছে। যে কারণে আন্তর্জাতিক বাজারেও এলনজি দাম কমেছে; আবার বাংলাদেশের যে মার্ক-আপ ছিল এলএনজির, সেটিও কমে এসেছে।'
তিনি বলেন, শেভরন ও কাতারের প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো বড় সরবরাহকারীদের বকেয়া সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়েছে। একসময় এসব প্রতিষ্ঠানে ৬০০-৭০০ মিলিয়ন ডলার বিল বকেয়া ছিল। 'এখন কোনো বকেয়া নেই,' বলেন গভর্নর।
তবে কাঠামোগত সমস্যাগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে হবে। ডলার কেনার মতো টাকা জোগাড় করার সক্ষমতা তাদের থাকতে হবে। টাকা ছাড়া আমরা তাদের ডলার দিতে পারব না।'
এই সক্ষমতা নিশ্চিত করতে সরকার পিডিবির ঋণের গ্যারান্টি দিতে এগিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।
গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হওয়া নিয়ে মানুষের উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায় গভর্নর বলেন, "হ্যাঁ, দাম বেড়েছে। তবে দ্বিগুণ করার পরও কি সরকারের কোনো লাভ থাকবে? না।'
আবাসন সংকট প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে সাশ্রয়ী আবাসন নির্মাণ বেশ কঠিন। যেটি হচ্ছে, সেটি ধনীদের জন্য উপযুক্ত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাশ্রয়ী আবাসনের জন্য গৃহঋণের সুদহার অনেক বেশি। এটি এখন প্রায় ১২ শতাংশ।
'কিন্তু বিদেশে এটি ২ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্থ। আবান খাতের ঋণের জন্য একটি যৌক্তির সুদহার করতে হবে, যেটি সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ হতে পারে। তবে এখনোও এটি সম্ভব নয়। এটির জন্য সময় প্রয়োজন,' বলেন তিনি।