Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
June 28, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JUNE 28, 2025
বুদ্ধিজীবী হত্যা: বিনি সুতার মালাটি গাঁথা হলো না

মতামত

তৌহিদ এলাহী
14 December, 2023, 03:00 pm
Last modified: 14 December, 2023, 03:01 pm

Related News

  • কাশ্মীর সংকটে উত্তেজনা নয়, দুই দেশের যৌথ সমাধানই একমাত্র পথ
  • কয়েকটি প্রস্তাবের ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাঠাল ইসি
  • ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এর অন্য কোনো নাম নেই
  • আরেফিন স্যার, অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনার স্থান আমাদের হৃদয়ে
  • সংস্কারের সুপারিশগুলোতে মাত্র ৭টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে: ঐকমত্য কমিশন

বুদ্ধিজীবী হত্যা: বিনি সুতার মালাটি গাঁথা হলো না

দার্শনিক এডোয়ার্ড সাইদ মনে করেন, প্রতিটি বিপ্লব-প্রতিবিপ্লবের বাবা-মা হচ্ছে চিন্তকেরা। শুধু বাবা-মা নয়—ভাই-বোন , ভাগিনা, ভাতিজীও হচ্ছেন বুদ্ধিজীবীরা। পাকিস্তানিরা বুঝতে পারে, বাংলাদেশের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। একটি স্বাধীন দেশের চিন্তার, উন্নয়ন ও প্রগতির নেতৃত্ব দেবে এই বুদ্ধিজীবীরা, তাই তাদেরকে নিধন করতে পারলেই ভেঙে যাবে একটি স্বাধীন দেশের মেরুদণ্ড। তারা সফল হয়েছিল।
তৌহিদ এলাহী
14 December, 2023, 03:00 pm
Last modified: 14 December, 2023, 03:01 pm
ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস

কেন হত্যা করা হয়েছিল বুদ্ধিজীবীদের? 

এ প্রশ্নের উত্তর সহজ: একটি জাতির উন্নয়ন-অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য। 

ধারণাগত এ উত্তরের বাইরে এ প্রশ্নের বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তিমূল অনেক গভীরে প্রোথিত। পৃথিবীর উন্নয়ন ও রাজনৈতিক ইতিহাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বুদ্ধিজীবী, চিন্তকদের অবদানগুলো। এ বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা প্রবাহিত হয় প্রজন্ম হতে প্রজন্মান্তরে, পরম্পরা মেনে, ধাপে ধাপে। 

আজ হতে প্রায় ২,৭০০ বছর পূর্বে ভারতীয় লিখিত দর্শনের ভিত্তিমূল উপনিষদগুলো রচিত হয় অজানা লেখকদের হাতে। তাদের এ শিক্ষা ও চিন্তা এসেছে বৈদিক দার্শনিকদের প্রস্তাবনাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে। বৈদিক, জৈন, বৌদ্ধ ও উপনিষদের দর্শন ও চিন্তাসমূহ এসেছে পরম্পরা ধরে। প্রায় ২,৪০০ বা ২,৫০০ বছর আগে, সিদ্ধার্থ গৌতমা নেপালের লুম্বিনি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন নির্বাণ লাভের দীক্ষা দিতে। বুদ্ধের দর্শনগুলোই পরবর্তীতে ছডিয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে সারা দুনিয়ায়। মানুষ চিন্তা করতে শিখেছে তাদের দীক্ষায়। তার শিষ্য বা সমসাময়িক, যেমন অজিত কেশ, পায়াসি, কপিল, কণাদ, নাগসেন, বুদ্ধঘোষ, ভদন্ত, সঞ্জয়, মকখলি গোসাল, যশোমিত্র এ চিন্তাগুলোকে ঋদ্ধ করেন। আর্যভট্ট , চাণক্য, ভাসকরাদের বস্তুবাদী ও গাণিতিক দর্শন বয়ে এসেছে তাদের মাধ্যমে। 

এখনকার উন্নত ইউরোপ আমেরিকায় যখন অধিকাংশ মানুষ গভীর জঙ্গলে আদিম শিকারি-সংগ্রাহক ছিল, তখন এ উপমহাদেশে জন্ম নেয় সিন্ধু, মহেঞ্জোদারো, হরপ্পাসহ অনেক উন্নত সভ্যতার। এগুলো হঠাৎ মাটি ভেদ করে উঠে আসা প্রাচীন কোনো নির্দশন নয়, এগুলো ছিল এ অঞ্চলের মহান চিন্তক ও দার্শনিকদের গভীর জ্ঞানের আলো। 

প্রায় সাড়ে পঁচিশশত বছর পূর্বে চৈনিক দার্শনিক কনফুসিয়াস তার দর্শন প্রচার করে গেছেন। কনফুসিয়াস, লাউজু, সানজুদের চিন্তা ও অ্যাক্টিভিজমের উত্তরসূরি হচ্ছেন সান ইয়াৎ সেন, মাও সে তুং। আধুনিক চীন ও পূর্ব এশিয়া তাদের চিন্তার ফসল। 

সক্রেটিসদেরও আগে থেলিসের হাত ধরে গ্রিক তথা পাশ্চাত্য দর্শন শুরু হয় প্রায় ২,৬০০ বছর পূর্বে। গ্রিকরা অনুপ্রেরণা পেয়েছিল তাদের পূর্ববর্তী মিশরীয় ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ও চিন্তা থেকে। এনাক্সিমেন্ডার, পিথাগোরাস, লিউসিপাস, ডেমোক্রিটাসদের মত চিন্তকরা তাদের পূর্বসূরিদের চিন্তাকে প্রশ্ন করে নতুন উত্তর খুঁজেছেন। সক্রেটিস-অ্যারিস্টটল-প্লেটো পূর্বসূরিদের চিন্তাকে আপডেট করে আধুনিক ইউরোপীয় চিন্তাধারার ভিত্তি স্থাপন করেছেন। এদের চিন্তার ফসল রেনে দেকার্ত, এমানুয়েল কান্ট, হেগেল, নিটশে, জন লক, হবস, হিউম, রাসেল, জাঁক লাকা, ফুকো, দেরিদা, ফ্রয়েড, নিউটন, এডওয়ার্ড সাইদ, আইন্সটাইন, রুশো, ভলতেয়ারের চিন্তা ও প্রস্তাবনাগুলো। যদি পাশ্চাত্য সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে স্বীকার করেন, তাহলে মনে রাখতে হবে—এসব মহান মনীষীর চিন্তার উৎপাদ হচ্ছে পশ্চিমের প্রাধান্য, হেজেমনি ও উন্নয়ন।

গ্রিক দর্শন ও জ্ঞান চর্চা হতে অনুপ্রাণিত হয়ে ৮০০–১,৩০০ সাল পর্যন্ত জ্ঞান চর্চার আধার হয় ইসলামি সভ্যতা। সেমেটিক ধর্মগুরুদের সাথে আধুনিক বিজ্ঞান-দর্শন চিন্তার মিথষ্ক্রিয়া ঘটে। ইমাম গাজ্জালি, ইবনে সিনা, ইবনে রুশদ, আল হাসান, আল খারিজমি, রুমি এদের মাধ্যমে ইসলামি সভ্যতার প্রভাব বিস্তৃত হয় সারা দুনিয়াজুড়ে। যতদিন এ জ্ঞানচর্চা ও চিন্তা বেগবান ছিল, ততদিন আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ইসলামি সাম্রাজ্যের। 

রোমান চিন্তার আদিপুরুষরা হচ্ছেন সিসেরো, মার্কাস অরেলিয়াস, এপিক্টেটাস, সেনেকারা। ম্যাকিয়াভেলি, আগামবেন, বেনোদিত্ত ক্রোচে, থমাস একুইনাস, জিওর্দানো ব্রুনো ও সিসেরা বেকারিয়াদের চিন্তা ও উদ্ভাবন হঠাৎ কোনো প্রাপ্তি নয়, এগুলো তাদের পূর্বসূরিদের লিগ্যাসি। 

পৃথিবীর ইতিহাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব হচ্ছে পুঁজিবাদী মুক্তবাজার ব্যবস্থা এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা। আধুনিক পৃথিবীর চালিকা শক্তি হচ্ছে এ দুটি ধারা। তবে এ পর্যায়ে এসে পৃথিবীর প্রায় সব দেশ দুটি ধারার উল্লেখযোগ্য অংশ সংযোজন-বিয়োজন করে নিজেদের উন্নয়নকামী ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। 

'ওয়েলথ অব নেশন' বইয়ের মধ্যে অ্যাডাম স্মিথ বাজার অর্থনীতির যে কাঠামো তুলে ধরেন, তা পরবর্তীতে নানারূপে ধাপে ধাপে সংশোধন, পরিমার্জন করেন ডেভিড রিকার্ডো, জন স্টুয়ার্ট মিল, জোশেফ স্কুম্পিটার, মিল্টন ফ্রিডম্যান, ফ্রেড্রখ হায়েক প্রমুখ। কার্ল মার্ক্সের সমাজতান্ত্রিক তত্ত্বগুলোতে ধাপে ধাপে অবদান রেখেছেন ফ্রেড্রিখ এঙ্গেলস, ভ্লাদিমির লেলিন, রোজা লুক্সেমবার্গ, ট্রটস্কি, অ্যান্টোনিও গ্রামসি, বার্নস্টেইন প্রভৃতি চিন্তক ও বুদ্ধিজীবীরা। 

ধর্মের তত্ত্ব ও চর্চাগুলোতেও বুদ্ধিবৃত্তিক ও চিন্তার প্রবাহ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে যায়। ইসলাম ধর্মের অন্য সব বিষয় বাদ দিয়ে শুধু হাদিস সংকলন নিয়ে চিন্তা করলেই এর সত্যতা পাওয়া যায়। নবী করিম (সা.)-এর চিন্তা, কথা, কর্ম চিন্তক ও ভাবুক সাহাবীরা আত্মস্থ করেছেন, তাদের থেকে পেয়েছেন তাবেঈগণ (সাহাবীদের পরিচিত), তাবেঈগণ থেকে পেয়েছেন তাবে-তাবেঈনগণ (তৃতীয় প্রজন্ম, যারা তাবেঈদের পরিচিত)। এদের পরম্পরা থেকেই মূলত হাদিস সংগ্রহ করেন সিহাহ সিত্তাহ-এর সংগ্রাহকগণ বা আগে-পরের অন্যান্য সংকলকগ্ণ। এদের মধ্যে ইমাম বুখারী ছিলেন ইমাম মুসলিম ও তিরমিযীর সরাসরি গুরু। বাকিদের মধ্যেই একটা জ্ঞান আদানপ্রদান ও শেয়ারিংয়ের প্রামাণ পাওয়া যায় ইসলামের ইতিহাসে। পৃথিবীর অন্যান্য প্রায় সকল ধর্মতত্ত্ব ও চর্চা পরম্পরা নির্ভর। 

খুব বেশি দূর না গিয়ে আমাদের দেশের অধ্যাপক রাজ্জাকের লিগ্যাসি আলোচনার দাবি রাখে। তিনি পাক হানাদারদের কবল থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান, দেশের ম্রিয়মাণ বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের মধ্যেও তার অবদান জ্বলজ্বলে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের থিংকট্যাংকের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল, ছয়দফা থেকে শুরু করে ৭০ এর নির্বাচনের ইশতেহারে তার ইনপুট ছিল। আহমদ ছফা, আনিসুজ্জামান, রেহমান সোবহান, ড. কামাল হোসেন , তাজউদ্দিন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ূন আহমেদ, সরদার ফজলুল করিম, সলিমুল্লাহ খান ছিলেন তার সরাসরি শিষ্য। বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দিনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল, তারাও অধ্যাপক রাজ্জাকের ছাত্র ও শিষ্য ছিলেন। পরবর্তীতে, তাজউদ্দিন বঙ্গবন্ধুকে বলে অধ্যাপক রাজ্জাককে অবসরের পর চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধি করেন, মার্চ ১৯৭৫-এ তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে বঙ্গবন্ধুর সরকার। যা-ই হোক, এই সময়ে এসেও দেশে যে অল্প কজন মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করেন, তাদের বড় একটি অংশ অধ্যাপক রাজ্জাকের তৃতীয় প্রজন্মের শিষ্য। 

এবার আসি যারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে তাদের চিন্তার জগতটি কেমন ছিল। উর্দু কবি আল্লামা ইকবাল ছিলেন পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদের আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি একাধারে ছিলেন কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, নেতা, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক। মুসলিমদের জন্য পৃথক দেশের ধারণা তার চিন্তাপ্রসূত। যদিও উড়ে এসে জুড়ে বসা জিন্নাহর পাকিস্তানের ইতিহাস জিন্নাহময়, এতে ইকবালের ঠাঁই নাই। ইকবাল ছিলেন মহান চিন্তক ও কবি মির্জা গালিবের ভক্ত। গালিব বহন করেছেন আমির খসরু, মীর তকি মীরদের চিন্তার উত্তরাধিকার। এমনকি পরবর্তীতে ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ বা আহমেদ ফরাজসহ বহু সাহিত্যিক-চিন্তক ছিলেন ইকবাল, গালিব দ্বারা অনুপ্রাণিত।

অর্থাৎ মানুষ একা চিন্তা করতে শিখে না, তার চিন্তাগুরু লাগে, বাতিঘর লাগে, আইকন লাগে। চিন্তা পূর্বসূরিদের থেকে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে প্রবাহিত হয়। বিচ্ছিন্ন চিন্তার ফুলগুলো জোড়া লেগে লেগে দর্শনের মালা হয়ে যায়।

চিন্তা ও জ্ঞানচর্চা ব্যাপকভাবে গুরুমুখী। বিপ্লব বা আন্দোলনও তা-ই। ফরাসি বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, সিপাহি বিপ্লব, ফকির বিদ্রোহ, ফরায়েজি আন্দোলন, সত্যাগ্রহ, ভারতছাড় আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও সারা দুনিয়ার কলোনিবিরোধী আন্দোলনগুলোর দীক্ষা হতেই উৎসারিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণের মুক্তি আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, সুভাষচন্দ্র বসু, মাওলানা আজাদ, হাজী শরিয়তুল্লাহ, তিতুমীর, ক্ষুদিরাম, নেহেরু, মাও সে তুং, চে, ফিদেল, মাওলানা ভাসানী, শেরেবাংলা, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল প্রমুখের চিন্তা ও অ্যাক্টিভিজম প্রভাবিত করেছে বঙ্গবন্ধু ও তার অনুসারীদের। বঙ্গবন্ধু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে রাজনীতিক ও চিন্তাগুরু হিসেবে শ্রদ্ধা করেছেন শেষ সময় পর্যন্ত। বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা বই বা জীবনীগুলো পড়লেই পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। 

বিজয়ের প্রাক্কালে প্রায় ১,১০০ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা পাকিস্তানি মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলির হঠাৎ রাগের বশে নেয়া কোনো সিদ্ধান্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে অনেক আগে থেকেই রবীন্দ্রনাথকে হিন্দু কবি, বাংলাকে হিন্দুর ভাষা, এদেশের মানুষকে তৃতীয় শ্রেণির মানুষ হিসেবে অবজ্ঞার চোখে দেখত পাকিস্তানিরা ও পাকিস্তানপন্থীরা। তাদের চিন্তার কাউন্টার দর্শন হলো জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র, সাম্য ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এ চিন্তার চিন্তক ও অ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে ছিলেন প্রায় বিশ হতে পঁচিশ হাজার সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক-সংগীত ও শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। আলবদর ও আলশামসসহ অন্যান্য দোসরদের হাতে একাত্তরের জুলাই মাসের মধ্যে তুলে দেয়া হয় তাদের তালিকা। তখন থেকেই শুরু হয় তাদের কিলিং মিশন। ওই সময় মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং বা অন্য কোনো উপযুক্ত প্রযুক্তি ছিলনা, তাই হঠাৎ করে তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। যখন পাকিস্তানি বাহিনীর দুয়ারে পরাজয় কড়া নাড়ছিল, তখন তারা একেবারে শেষ দিকে এসে হন্যে হয়ে যায়, দলে দলে চলে বুদ্ধিজীবী নিধন। পুরো মিশন সম্পন্ন না হলেও টপ লিস্টেডরা শিকার হয়েছেন নির্মমভাবে। 

দার্শনিক এডোয়ার্ড সাইদ মনে করেন, প্রতিটি বিপ্লব-প্রতিবিপ্লবের বাবা-মা হচ্ছে চিন্তকেরা। শুধু বাবা-মা নয়—ভাই-বোন , ভাগিনা, ভাতিজীও হচ্ছেন বুদ্ধিজীবীরা। পাকিস্তানিরা বুঝতে পারে, বাংলাদেশের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। একটি স্বাধীন দেশের চিন্তার, উন্নয়ন ও প্রগতির নেতৃত্ব দেবে এই বুদ্ধিজীবীরা, তাই তাদেরকে নিধন করতে পারলেই ভেঙে যাবে একটি স্বাধীন দেশের মেরুদণ্ড। 

তারা সফল হয়েছিল। 

গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, আবুল খায়ের, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, সিরাজুল হক খান, শহীদুল্লাহ কায়সার, নিজামুদ্দীন আহমেদ, সেলিনা পারভীন প্রমুখের মতো প্রধানতম প্রায় ১,১০০ চিন্তকেরর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, জাতি তার মাশুল দেয় পদে পদে। পঁচাত্তরে জাতির পিতার পরিবারের হত্যাকাণ্ড, উপর্যুপরি সামরিক ক্যু ও অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা দখল দেশের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির ধারাকে নস্যাৎ করে দেয়। এসব প্রতিক্রিয়াশীলদের উত্থানের কাউন্টার ইন্টেলেকচুয়াল শক্তি বাংলাদেশে ছিল না। অর্ধ-সেমি বুদ্ধিজীবীরা সামান্য ক্ষমতার স্বাদ ও গন্ধ পাওয়ার লোভে প্রতিনিয়ত ডিগবাজি খাচ্ছিল ক্ষমতাশীলদের পায়ে পায়ে। একটি বুদ্ধিজীবী প্রজন্মকে নিধন করার পাশাপাশি হত্যা করা হয়েছিল তাদের উত্তরাধিকারকে। তাদের থেকে দেখে শিখতে পারবে—এমন একটি প্রজম্নের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে (Cessation of the Intellectual Legacy)।

বাংলাদেশের দুটি বড় ঐতিহাসিক অর্জনের দিন হচ্ছে ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ২৫ মার্চের রাতে বাঙালির কণ্ঠরোধ করার জন্য হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে কণ্ঠরোধ করা যায়নি, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়। এ বিজয়ের আগে আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার জন্য ১৪ ডিসেম্বর এ দেশের প্রধান বুদ্ধিজীবীদের নিধন করা হয়। বুদ্ধির ফুলগুলো দিয়ে চিন্তার মালা গেঁথে দেশকে সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত করা যায়নি, ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বিনি সুতাটি।

আশা করি, প্রকৃত দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব, উদার-গণতান্ত্রিক মুক্তবুদ্ধির চর্চা এ ক্ষতকে সারিয়ে তুলবে ধীরে ধীরে। ধীরে ধীরে ছিঁড়ে ফেলা মালাটি আবার জোড়া লাগাবে। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার শূন্যতা পূরণ করে নতুন একঝাঁক চিন্তক-অ্যাক্টিভিস্টরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সফল হোক।

Related Topics

টপ নিউজ

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস / বুদ্ধিজীবী হত্যা / শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস / মতামত

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ১৫৪ যাত্রী নিয়ে শাহজালালে জরুরি অবতরণ করল বিমান
  • ২০২৪-এর নির্বাচন ‘এত ভয়ংকর’ হবে জানলে দায়িত্বই নিতাম না: সাবেক সিইসি আউয়াল
  • গ্রাহকের ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ধামাকা শপিং সংশ্লিষ্টদের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ
  • পেন্টাগনের ভিডিওতে দেখা গেল ইরানে ফেলা ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমার বিধ্বংসী ক্ষমতা
  • ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দিলেন নিউইয়র্কের সম্ভাব্য মেয়র জোহরান মামদানি
  • মার্কিন ভিসা আবেদনকারী বাংলাদেশিদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল পাবলিক করতে বলল দূতাবাস

Related News

  • কাশ্মীর সংকটে উত্তেজনা নয়, দুই দেশের যৌথ সমাধানই একমাত্র পথ
  • কয়েকটি প্রস্তাবের ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাঠাল ইসি
  • ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এর অন্য কোনো নাম নেই
  • আরেফিন স্যার, অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনার স্থান আমাদের হৃদয়ে
  • সংস্কারের সুপারিশগুলোতে মাত্র ৭টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে: ঐকমত্য কমিশন

Most Read

1
বাংলাদেশ

উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ১৫৪ যাত্রী নিয়ে শাহজালালে জরুরি অবতরণ করল বিমান

2
বাংলাদেশ

২০২৪-এর নির্বাচন ‘এত ভয়ংকর’ হবে জানলে দায়িত্বই নিতাম না: সাবেক সিইসি আউয়াল

3
বাংলাদেশ

গ্রাহকের ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ধামাকা শপিং সংশ্লিষ্টদের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

4
আন্তর্জাতিক

পেন্টাগনের ভিডিওতে দেখা গেল ইরানে ফেলা ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমার বিধ্বংসী ক্ষমতা

5
বাংলাদেশ

‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দিলেন নিউইয়র্কের সম্ভাব্য মেয়র জোহরান মামদানি

6
বাংলাদেশ

মার্কিন ভিসা আবেদনকারী বাংলাদেশিদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল পাবলিক করতে বলল দূতাবাস

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net